বাসস
  ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৫
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪৮

কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে

কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): সূর্যমুখী ফুলের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কারণ গত কয়েক বছরে সূর্যমুখী ফুল চাষে সাফল্য পেয়েছেন এ জেলার চাষিরা। এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
কৃসি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকেরা সুর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষক সরকারি ভাবে বীজ ও সার পাওয়ায় চাষাবাদে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার সূর্যমুখী চাষে ২৭৫ হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । স্বাস্থ্য ঝুঁকি কম হওয়ায় সূর্যমুখী তেলের চাহিদাও ভালো। এতে সূর্যমুখী চাষাবাদে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। সরকারী ভাবে বীজ ও সার পেয়ে জেলা সদরের পাশাপাশি জেলার চান্দিনা, বরুড়া, লাকসাম, তিতাস, দাউদকান্দি, এলাকায় চাষ হয়েছে।
জানা যায, অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী লাভজনক ফসল বলছে কৃষক। সূর্যমুখী চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষকেরা অনেক খুশি। মাত্র ১’শ দিনে এ ফসল ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে ফলন ভালো ও তুলনা মূলক লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এ চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। বর্তমানে ফুল ফুটা অবস্থায় রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে পরিপক্ক হবে। কৃষকরা নিজেরা ভোজ্য তেল তৈরি করে প্রযোজনীয তেলের চাহিদা পূরণ করে বাইরে সরবরাহ করতে পারবে। ভবিষ্যতে আবাদ বাড়াানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
সদর উপজেলার চাষী আনোয়ার হোসেন বাসসকে বলেন, গত বছর অন্যের কাছ থেকে সূর্যমুখী ফুলে বীজ নিয়ে অল্প পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছিলাম। এতে  অনেক লাভবান হয়েছি। তাই চলতি মৌসুমে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৫০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। এটি খুবই লাভজনক একটি ফসল।
দাউদকান্দি উপজেলার কৃষক হযরত আলী বলেন, চলতি মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে সুর্যমুখীর আবাদ করেছি। ফলন ভালো দেখছি। ব্যবসা ভালো হলে আগামীতে চাষের মাত্রা বাড়িয়ে দেবো। একই উপজেলার আরেক ফুল চাষি সোহেল জানান, সূর্যমূখী একটি লাভজনক ফসল। অন্যান্য ফসলের চেয়ে চাষাবাদে সময় ও খরচ দুটোই কম লাগে। জমিতে স্বল্প সময়ে সূর্যমুখী চাষ করা যায়। রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। সূর্যমুখীর গাছ রান্নার জ্বালানি হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারবো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমূখীর তেল মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। সূর্যমুখীর চাষ লাভজনক। এবার সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সূর্যমুখী আবাদ করার জন্য কৃষকদের প্রতিনিয়তই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আবহাওয়া ভালো থাকলে অন্যান্য ফসলের তুলনায় সূর্যমুখী চাষ করে চাষিরা বেশি লাভবান হবেন। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে সূর্যমুখীর চাষ হবে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষি বিভাগ।