বাসস
  ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ২২:২০

উপজেলা নির্বাচনে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না : চট্টগ্রামে ইসি আনিছুর

চট্টগ্রাম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস) : বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯টি জেলার প্রতিটি উপজেলায় ইভিএম’র মাধ্যমে এবং বাকি জেলাগুলোর উপজেলায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। এ নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য কর্যা হবে না।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর পিটিআই মিলনায়তনে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা এবং রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পাবর্ত্য জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোন কেন্দ্রে যদি ভোট কারচুপি বা অনিয়ম হয় তবে সে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার সাথে সাথে ভোট বন্ধ করে দিতে পারবেন। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের পক্ষে থেকে যে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবর্দা আপনাদের পাশে থাকবে।
তিনি বলেন, গত নির্বাচন একই দিনে সম্পন্ন হলেও এবারের নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও কৃচ্ছ্রতা সাধনের লক্ষ্যে চার ভাগে শেষ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ৮ মে ১৫০টি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি জেলাগুলোতে ২১ মে, ২৯ মে ও ৫ জুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। দুর্গম, পাহাড়ি ও দ্বীপ এলাকাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটের আগের দিন নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হবে এবং বাকি জেলাগুলোতে ভোটের দিন সকাল ৮টার আগে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেয়া হবে এবং বিকাল ৪ টায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে।
ইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করা হবে না। যেভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে, সেভাবে এ নির্বাচন হবে। কোনোভাবে জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে নিচে নামার সুযোগ নেই। নতুন সরকারের আওতায় কিভাবে নির্বাচন হচ্ছে সেটি সবাই দেখবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী থাকছে না এবং দলীয় প্রতীক দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাজেই এ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আশা করছি, ভোটারের সংখ্যাও বাড়বে।  
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী  মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ মুহূর্তের প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কখনোই প্রার্থিতা বাতিল হয়নি। চট্টগ্রামে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। কারণ বাতিল করার মতো উপাদানও ছিল। তাকে (মোস্তাফিজুর রহমান) সপ্তাহখানেক আগে থেকে নজরদারি করা হচ্ছিল। যখন তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মারধর করছেন, সার্কেল এসপি তাকে নিবৃত্ত করতে পারছেন না, এরপর আর বসে থাকা যায়নি। তখন আমরা প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এক্ষেত্রেও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালীন কোনোরকমের সিদ্ধান্ত নিতে কুণ্ঠাবোধ করবো না।  
ইসি আনিছুর রহমান নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের একটাই চাওয়া, নির্বাচনকে সুন্দর করতে হবে। যেখানেই কোনও অনিয়ম হবে, কারচুপি বা অন্যায় কার্যক্রম হবে সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যবস্থা নিতে পারবেন। কারণ প্রিজাইডিং অফিসার কেন্দ্রের সব দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ইচ্ছে করলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারবেন। আপনারা ভোটের দিন যে যেখানে থাকবেন, সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। তবে তা আইনের মধ্যে। এতে যদি কোনোরকমের বিপদগ্রন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, আমরা আপনাদের পাশে আছি। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে কেউ চায় না নির্বাচন খারাপ হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বক্তব্যে বিষয়টি উল্লেখও করেছেন। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সব করবেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নুরে আলম মিনা, বিজিবি রিজিয়ন কমান্ডার মো. আজিজুর রহমান, ডিজিএফআই শাখা অধিনায়ক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার, আনসার ও ভিডিপি উপ-মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সকল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও জেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।