শিরোনাম
ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : টানা দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল।
বিপিএলের ১১তম আসরের ফাইনালে আজ বরিশাল ৩ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম কিংসকে। গেল বছর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো বরিশাল।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ফাইনালের মঞ্চে হারলো চট্টগ্রাম। এর আগে ২০১৩ সালের ফাইনালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে ৪৩ রানে হেরেছিলো চট্টগ্রাম। বিপিএলে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ চারবার চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনবার শিরোপা জিতেছে ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি।
ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে চট্টগ্রাম কিংস। জবাবে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান করে বরিশাল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ইমন ও নাফি। পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান তোলেন তারা। এর মধ্যে বরিশালের স্পিনার তানভীর ইসলামের করা চতুর্থ ওভারে ১৮ রান নেন ইমন-নাফি।
১১তম ওভারে চট্টগ্রাম ১শ রান স্পর্শ। একই ওভারে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমন(৩০ বলে)।
১২তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নাফি। এজন্য ৩৭ বল খেলেছেন এই পাকিস্তানী ব্যাটার।
১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে ইমন-নাফির উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন বরিশালের পেসার এবাদত হোসেন। বরিশালের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৬৬ রান করা নাফি। উদ্বোধনী জুটিতে ইমনের সাথে ৭৬ বলে ১২১ রান যোগ করেন নাফি।
নাফি ফেরার পরও চট্টগ্রামের রানের চাকা সচল রাখেন ইমন ও নতুন ব্যাটার ইংল্যান্ডের গ্রাহাম ক্লার্ক। তানভীরের করা ১৬তম ওভারে ৩টি ছক্কায় ২২ রান তুলে চট্টগ্রামের রান দেড়শতে নেন ইমন ও ক্লার্ক। এতে ২শ রানের সংগ্রহ পাবার সুযোগ সৃষ্টি হয় চট্টগ্রামের।
কিন্তু শেষ ৪ ওভারে ৩১ রানের বেশি তুলতে পারেনি চট্টগ্রাম। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আলির করা শেষ ওভার থেকে ২ উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ৬ রান পায় চট্টগ্রাম। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায় চট্টগ্রাম।
২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৩ বলে ৪৪ রানে আউট হন ক্লার্ক। ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৯ বলে অনবদ্য ৭৮ রান করেন ইমন। দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ বলে ৭০ রান যোগ করেন ইমন-ক্লার্ক।
বরিশালের আলি ২১ রানে এবং এবাদত ৩৫ রানে ১টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৯৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দারুণ সূচনা করে বরিশালও। চট্টগ্রামের মত পাওয়ার প্লেতে বরিশালকে ৫৭ রান এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও তাওহিদ হৃদয়। সপ্তম ওভারে পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে অর্ধশতক পূর্ণ করেন অধিনায়ক তামিম। ২৪ বল খেলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
নবম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে চট্টগ্রামকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। প্রথম বলে তামিমকে এবং চতুর্থ বলে ইংল্যান্ডের ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। ২৯ বলে ৫৪ রানে থামেন তামিম। হৃদয়ের সাথে ৪৯ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন তামিম। মালান করেন ১ রান।
সাবধানে খেলে ১১তম ওভারে আউট হন হৃদয়। ৩টি চারে ২৮ বলে ৩২ রান করেন তিনি।
দলীয় ৯৬ রানে হৃদয় ফেরার পর বরিশালের জয়ের পথ তৈরি করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স। চতুর্থ উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ১৪ বলে ৩৪ ও পঞ্চম উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সাথে ২৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন মায়ার্স। মুশফিক ৩টি চারে ৯ বলে ১৬ এবং মায়ার্স ৩টি করে চার-ছক্কায় ২৮ বলে ৪৬ রানে আউট হন।
১৮তম ওভারে মায়ার্স ও মাহমুদুল্লাহকে ফিরিয়ে চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে ফেরান শরিফুল। এমন অবস্থায় জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে ২০ রান দরকার পড়ে বরিশালের।
১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে এবং শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে বরিশালকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নেন রিশাদ হোসেন। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। ২টি ছক্কায় ৬ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন রিশাদ।
চট্টগ্রামের শরিফুল ৪ ওভারে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
চট্টগ্রাম কিংস : ১৯৪/৩, ২০ ওভার (ইমন ৭৮*, নাফি ৬৬, আলি ১/২১)।
ফরচুন বরিশাল : ১৯৫/৭, ১৯.৩ ওভার (তামিম ৫৪, মায়ার্স ৪৬, শরিফুল ৪/৩৪)।
ফল : ফরচুন বরিশাল ৩ উইকেটে জয়ী।