বাসস
  ০১ মে ২০২৪, ১৯:২৪
আপডেট : ০১ মে ২০২৪, ২০:২৮

মহান মে দিবস পালিত

ঢাকা, ১ মে, ২০২৪ (বাসস) : বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বুধবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।
শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, নীতি, আদর্শ বজায় রেখে বাংলাদেশের কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে রাজধানীতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’
মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ঐতিহাসিক মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এর আগে কয়েকটি শ্রমিক পরিবারের নিকট আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন। পরে তিনি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম ইব্রাহিম, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পুতিয়ানেন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবির ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় শ্রমিক লীগ।  
জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর কুতুব আলম মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল,  বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজে’র কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তবে সরকারের কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা সাংবাদিকদের অধিকারের বিষয়ে উদাসীন। সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে অবিলম্বে টেলিভিশন ও পত্রিকায় অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করতে হবে। 
মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে। 
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু - অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছে সমাবেশে করেছে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার। পরে যৌথ উদ্যোগে লাল পতাকা মিছিল করে সংগঠনের নেতারা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সভাপতি সুলতানা বেগম।
মহান মে দিবস উপলক্ষে সকালে সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। 
এছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ লেবার কংগ্রেস (বিএলসি), ন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স সেন্টার, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (ট্যাফ) এবং শ্রমজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলো আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মানববন্ধন ও  র‌্যালির আয়োজন করে।