বাসস
  ০৪ মে ২০২৪, ১৯:৩৫

কাপ্তাই লেকের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

রাঙামাটি, ৪ মে, ২০২৪ (বাসস) : কাপ্তাই লেকের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
তিনি আজ দুপুরে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে ভিজিএফ (চাল) বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দীপংকর তালুকদার এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইসস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলী, পার্বত্য রাঙামাটি জেলার জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান।
আব্দুর রহমান বলেন, কাপ্তাই লেক তার সেই আগের সৌন্দর্য, রূপে নেই। এটি যেন নুইয়ে পড়েছে। তবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা কাপ্তাই লেকের আগের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে চাই। তবে এই সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হলে শুধু মৎস্যজীবীদেরই নয়, এলাকার সর্বসাধারণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
জেলেদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী তিন মাস আপনারা লেকে মাছ ধরবেন না। নির্দিষ্ট সময়ের পর  নিষিদ্ধ ঘোষিত মশারি জাল, বেহুন্দী জাল, কারেন্ট জাল এগুলো ব্যবহার করবেন না। জাটকাসহ ছোট মাছ ধরবেন না।
তিনি বলেন, আপনারা নিজ সন্তানকে যেমন পরিপূর্ণ করে গড়ে তোলেন, তেমনি মাছকেও বড় হতে দিতে হবে। কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে যা যা করা দরকার সবকিছুই করা হবে।
 তিনি আরো বলেন, আপনাদের লেকের মাছ আপনারাই ধরবেন। অন্য এলাকা থেকে কেউ এসে এই মাছ ধরবে না। এই লেকের ব্যবস্থাপনায় আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাপ্তাই লেক নিয়ে প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
 রাঙামাটির বতর্মান ফিস ল্যান্ডিং সেন্টারটি সংস্কার করে আধুনিক ও উন্নত মানের ফিস ল্যান্ডিং স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
কৃষি জমিতে ব্যবহার করা কীটনাশকের ফলে মাছের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে ফসলের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান মন্ত্রী
তবে কেউ যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করে, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এসময় তিনি কাপ্তাই লেকে পোনা অবমুক্ত করেন এবং জেলেদের মধ্যে ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করেন।
 কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকার সময়ে মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। এ সময় সরকার নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণের জন্য ২০১০ সালে প্রথমে ২৫০৮ (দুই হাজার পাঁচশত আট জন) মৎস্যজীবী পরিবারকে খাদ্য সহায়তার আওতায় নিয়ে আসে।
কোন প্রকৃত মৎস্যজীবী যাতে সরকারের এ বিশেষ সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য প্রতি বছর জেলেদের তথ্য হালনাগাদ করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে ২৬ হাজার ৮৬৬  জন জেলে পরিবারকে ভিজিএফ কার্ডের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এ বছর ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে সকল ধরণের মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে।