শিরোনাম
ঢাকা, ৬ মে, ২২৪ (বাসস): ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) কুড়িল এলাকায় একটি বাড়িতে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং অন্য আরেকটি বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত এই জরিমানা করেন। মেয়র এ সময় ডিএনসিসি এলাকায় আরও কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেন।
রাজধানীর কুড়িল প্রগতি সরণিতে আজ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও মশক নিধন অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে টানা রোদ ছিল এবং এখন আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে আবার আজকে রোদ। রোদ ও বৃষ্টি এমন আবহাওয়ায় জমা পানিতে এডিসের লার্ভা জন্মায়। তাই এই সময়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বর্ষা শুরুর আগে থেকেই আমরা একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু করেছি। সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছে, অভিযান পরিচালনা করছে। এডিসের লার্ভা পেলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছে, লার্ভিসাইডিং ও এডাল্টিসাইডিং করছে। জনগণকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি আমরা। এডিসের লার্ভা পেলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা জরিমানা করছে। আমাদের উদ্দেশ্য জেল জরিমানা করা না। আমাদের উদ্দেশ্য হল ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু সবাই সচেতন না হলে সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র ট্রাকে উঠে এডিস মশার উৎসস্থল-গাড়ীর পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে জনগণকে সচেতন করেন এবং প্রগতি সরণি এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনগণের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
মেয়র বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। যেসকল পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি কর্পোরেশন কিনে নিচ্ছে। ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যত্রতত্র না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিন এবং নগদ টাকা গ্রহণ করুন। পুরোনো টায়ার, কমোড, রঙের কৌটা এগুলো ছাদে বা বারান্দায় না রেখে আমাদের কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিয়ে টাকা নিন।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র নগদ অর্থের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্যে এসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি কিনে নেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিএনসিসি’র সকল ওয়ার্ডে একযোগে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, মসজিদের ইমাম, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করনীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা ও র্যালি আয়োজন করবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচারণার ব্যবস্থা করবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
কুড়িল এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক র্যালি এবং লিফলেট বিতরণ শেষে কুড়িল ব্রিজের নিচে রিকশাচালকদের মাঝে বিনামূল্যে ছাতা, পানির বোতল ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলা এবং হাছিনা বারী চৌধুরী, ডিএনসিসি'র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ইসহাক মিয়া, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন এবং সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর আমেনা বেগম।