বাসস
  ০৬ মে ২০২৪, ২১:২৫

আগামীকাল ৭ মে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ২০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী  

ঢাকা, ৬ মে, ২০২৪ (বাসস) : আগামীকাল ৭ মে স্বাধীনতার পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মা¯টারে ২০ম শাহাদাৎ বার্ষিকী। এ উপলক্ষে ঢাকা ও গাজীপুরর বিভিন্ন স্থানে স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে পক্ষকাল ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মিলাদ ও দোয়া  মাহফিল ও তবারক বিতরণ, স্মরণ সভা এবং বিশেষ স্মরণিকা প্রকাশ।
এই উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সাবেক সংসদ সদস্য এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাস্টারের ২০তম শাহাদতবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাস্টার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল একজন জননন্দিত শ্রমিক নেতা। তিনি ছিলেন কৃষক-শ্রমিক তথা আপামর মেহনতি মানুষের অতি আপনজন। গণতন্ত্রকামী এই ত্যাগী নেতা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সবসময় ছিলেন সোচ্চার। তিনি মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে কখনো পিছপা হননি। এজন্য তাঁকে বহুবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। মেহনতি মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়সহ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, “স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহ্সান উল্লাহ মাস্টারের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তিনি বলেন, শহীদ  আহ্সান উল্লাহ মাস্টার (গাজীপুর-২, গাজীপুর সদর-টঙ্গী) আসন হতে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই জননেতা ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য। তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর চেয়ারম্যান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজীবন মানবসেবায় নিয়োজিত এই ভাওয়াল বীর তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে শিক্ষক হিসেবেই পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন, তিনি আমৃত্যু তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত নোয়গাঁও এমএ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সমাজসেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলোপের পর উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির আহবায়ক হিসেবে উপজেলা পরিষদের পক্ষে মামলা করেন ও দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন।
শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা আহ্সান উল্লাহ মাস্টারের স্বপ্ন ছিল মাদক-সন্ত্রাস মুক্ত টঙ্গী- গাজীপুর গড়ার। কালে কালে তিনি হয়ে উঠেন জঙ্গি-সন্ত্রাসের মদদদাতা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের পথের কাঁটা। হাওয়া ভবনের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের নিশ্চিহ্ন করার নীল-নকশা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামাত মদদপুষ্ট একদল সন্ত্রাসী ২০০৪ সালের ৭ মে নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আহ্সান উল্লাহ মাস্টারকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে। একজন প্রিয় শিক্ষককে সন্ত্রাসীদের গুলি থেকে বাঁচাতে বুক পেতে দিয়েছিলো ছাত্র ওমর ফরুক রতন, সেও মৃত্যুবরণ করে। শুধু তাই নয়, আহ্সান উল্লাহ মাস্টার নিহত হওয়ার পর শোকার্ত, বিক্ষুব্ধ, প্রতিবাদী জনতার ওপর গুলি চালিয়ে আরো দু’জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে জোট সরকারের পুলিশ, গ্রেফতার করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের হাজারো নেতা-কর্মীকে। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের বাহিনী এই হত্যাকান্ডের প্রধান সাক্ষীকেও বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার কার্যক্রম এখনও চলছে। আশা করি, বিচারকার্য চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়ে বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হবে।  আমি শহীদ  আহ্সান উল্লাহ মাস্টারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’’
আগামীকাল ৭ মে সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯নং ওয়ার্ডের হায়দরাবাদ গ্রামে শহীদ আহসান উল্লাহ মা¯টারের কবরে পু®পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও স্মরণ  সভার আয়োজন করেছে। আহসান উল্লাহ মাস্টার (এমপি) স্মৃতি পরিষদ আজ  সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে অলোচনা ও স্মরণ সভার আয়োজন করে।  শহীদ  আহসান উল্লাহ  মা¯টার ( গাজীপুর-২ সদর-টঙ্গী) আসন হতে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুবার সংসদ সদস্য, ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য। তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের  কার্যকরী সভাপতি  ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  তিনি শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের  সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলোপের পর চেয়ারম্যান সমিতির আহবায়ক হিসেবে উপজেলা পরিষদের পক্ষে  মামলা করেন ও দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এক পর্যাযে তিনি গ্রেফতার হন ও কারা ভোগ  করেন। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৭ মে বিএনপি জোট সরকারের মদদপুষ্ট একদল সন্ত্রাসী নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল দ্রুত বিচার আইনে এ হত্যা মামলার রায় হয়।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের বড় ছেলে মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি গ্রামের বাড়ি হায়দরাবাদ, টঙ্গী ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীসহ সকলকে শহীদ আহসান উল্লাহ মা¯টারের শাহাদৎ বার্ষিকীর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার পরিষদের সভাপতি এডভোকেট আবদুল বাতেন ও সাধারণ স¤পাদক আতাউর রহমান মসজিদে মসজিদে আহসান উলাহ মা¯টারের সকল কর্মসূচি সফল এবং তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় সব্ইাকে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।