শিরোনাম
শেরপুর, ১০ মে, ২০২৪ (বাসস): শেরপুরে হাইব্রীড ‘আপন’ জাতের ধান আবাদ পরিদর্শন করেছেন ধানটির উদ্ভাবকসহ চীনা বিশেষজ্ঞ দল।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নকলা উপজেলার চরমধুয়া এলাকায় কৃষক হুমায়ুন মিয়ার ১৭ কাঠা (৮৫ শতাংশ) জমিতে বোরো মৌসুমে আবাদকৃত নতুন জাতের এই ধানক্ষেতের ফলন ও সার্বিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষন করেন তারা। পরিদর্শক দলে ছিলেন জাত উদ্ভাবক চীনের সাইথওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজির গবেষক অধ্যাপক হু (Mr. Hus), বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান চীনের এয়ার ফার্মার এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মিস সালামো (Mis. Salamo) ও বিক্রয় ব্যবস্থাপক মিস জেসমিন (Mis. Jesmin)।
এসময় তাদের সাথে ছিলেন এসিআই সীড লিমিটেডের ব্যবসা পরিচালক সুধীর চন্দ্র নাথ, বিক্রয় ব্যবস্থাপক মনোসিজ কুমার মন্ডল, প্রোডাক্ট ম্যানেজার মো. হুমায়ুন রফিক ও কর্মকর্তা অলোক চন্দ্র শীল। পরিদর্শনকালে চীনা বিশেষজ্ঞরা আবাদ করা ধানক্ষেতে নেমে বিভিন্ন অংশ থেকে ধানগাছের গোছা এবং শীষ সংগ্রহ করে সেগুলোতে ধানের সংখ্যা গণনা করেন এবং এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পরে তারা স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলেন এবং মাঠ দিবসে বক্তব্য রাখেন।
এসিআই সীড লিমিটেডের ব্যবসা পরিচালক সুধীর চন্দ্র নাথ নাথ জানান, এসিআই ফরমুলেশন হাইব্রীড ধান-১৯ যার বাণিজ্যিক নাম হলো ‘আপন’। বোরো মৌসুমে আবাদযোগ্য এ ধানটি চিকন এবং গড় ফলন হেক্টরে প্রায় সাড়ে ৯ টন। অর্থাৎ শতাংশ প্রতি প্রায় এক মন করে। তাছাড়া এই ধানটি পাতা পোড়া রোগ প্রতিরোধী, প্রবল বাতাসেও ধান ঝড়ে পড়েনা। এর ভাতও বেশ ঝরঝড়ে ও পুষ্টিমান সমৃদ্ধ।দেশের সকল এলাকায় এই ধানটি আবাদযোগ্য হওয়ায় কৃষকদের মাঝে নতুন এই হাইব্রীড জাতের ধানটি নিয়ে বেশ সাড়া পড়েছে।
তিনি জানান, চীন থেকে আমদানী করা এই ধানের জাতটি কৃষি বিভাগের অনুমোদন পাওয়ায় এসিআই সীড কোম্পানী আগামী বছর থেকে এটির বাজারজাত করবে। এজন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় পর্যায়ে কৃষক মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে চীন থেকে আগত জাত উদ্ভাবক ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা সরেজমিনে এটির আবাদ পরিদর্শনে এসেছেন।
পরিদর্শন টিমের প্রধান জাত উদ্ভাবক চীনা গবেষক অধ্যাপক হু বলেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানকার মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। তাছাড়া খাদ্য চাহিদা থাকায় অল্প জমিতে অধিক ফলন উৎপাদন করতে হবে, একইসাথে পুষ্টিমানও নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য এখানে হাইব্রীড ধান-১৯ (আপন জাতের ধান) হতে পারে একটি আদর্শ জাতের ধান। এটি বিএলবি ও পোকামাকড় প্রতিরোধী। এর গড় ফলনও অনেক ভালো। এর ধান গাছও অনেক শক্তিশালী হয়ে থাকে। এই ধানের আবাদ বৃদ্ধি করা গেলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটি কার্যকর ভুমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।
মাঠ দিবসে বীজ ডিলার মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিথিরা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে শতাধিক কৃষক-কৃষানী, বীজ ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় স্থানীয় কৃষকরা জানান, হাইব্রীড ধান-১৯ (যা আপন নামে পরিচিত) ধানটির ফলন এবার বেশ ভালো হয়েছে। সামনের দিনে এই ‘আপন’ ধান কৃষকদের অতি আপন হয়ে ওঠবে।