বাসস
  ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২৭

বাংলাদেশের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা আবশ্যক: সাখাওয়াত

ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : নৌপরিবহন, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন অপরিহার্য। এটি সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকেদের আইনি পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের পথ সুগম করবে। 

আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ ২০২৪-এ বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

সাখাওয়াত বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা অপরিহার্য। যদি এটি বাস্তবায়ন করা যায়, আমি মনে করি বিভিন্ন স্তরের লোকেরা এসে গাইডলাইন তৈরি করতে পারে... একটি দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা থাকলে নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রয়োজন হবে না।’ 

সাখাওয়াত বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কোনো নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা নেই এবং তাই রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি আইন থাকতে হবে, অন্যথায় আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব ও কর্তব্য দেখতে পাবো না’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসলে যা দেখছি তা হল যে রাজনৈতিক দলগুলো গঠিত হচ্ছে এবং এরপরে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে। অতএব, আমি মনে করি রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি সংবিধান সংশোধন ছাড়াই এটা প্রণয়ন করা যেতে পারে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধের জোরালো আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বেসামরিক বা সামরিক কর্মকর্তা, আমলা বা ব্যবসায়ীদের মধ্যে অবসর গ্রহণের পর সংসদ সদস্য হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, পূর্বের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই এবং তারা মনোনয়নের জন্য ছয় থেকে আট কোটি টাকা ব্যয় করেন। যাকে আমরা মনোনয়ন বাণিজ্য বলি।

‘আমাদের অবশ্যই এ প্র্যাকটিসের অবসান ঘটাতে হবে’ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ‘একটি নিয়ম ছিল- কোনো রাজনৈতিক নেতা বা ব্যবসায়ীকে নির্বাচন করতে হলে সংলিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কমপক্ষে তিন বছর যুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু সে নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। এটা পুনরায় ফিরিয়ে আনা দরকার।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দেখছি, কিছু রাজনৈতিক দল এখন লোকজনের কাছে গিয়ে টাকা চাইছে এবং বলছে তাদের নির্বাচনের জন্য টাকা দরকার কারণ তারা ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল।’

‘অন্যান্য অনেক দেশের মতো, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের জন্য যৌথ স্টক কোম্পানি খোলা’, তিনি যোগ করেন।

সাখাওয়াত শিক্ষার্থীদের রাজনীতি করতে উৎসাহিত করতে এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা না করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনি বা আমরা যদি ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতে চাই- আপনারা সবাই ইতিমধ্যে দেখেছেন এর পরিণতি কী হতে পারে। ছাত্ররা অবশ্যই রাজনীতি করবে।’

তরুণদের অবশ্যই রাজনীতি করার এবং রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের রাজনীতিতে তরুণদের অংশ গ্রহণ দরকার। তাদের নিরুৎসাহিত করে লাভ নেই। এবং আমি আশা করি, আপনারা এটি করবেন না।’

সালেহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, শহীদুল্লাহ ফরাজী ও সারোয়ার তুষার।