বাসস
  ১২ জুন ২০২৪, ১২:২৫

জয়পুরহাটে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুরহাট: জেলায় উদ্বৃত্ত ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৬টি পশু

// শাহাদুল ইসলাম সাজু //
জয়পুরহাট, ১২ জুন, ২০২৪ (বাসস): জমে উঠেছে কোরবানীর পশুরহাট। জেলায় এবার কোরবানির জন্য ১ লাখ ৬৬  হাজার ৩৮৫ পশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হলেও পশু মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ২৭১টি। উদ্বৃত্ত আছে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৬টি পশু।
পশুর হাটবাজার ও  গ্রামে ঘুরে সাধারণ ক্রেতা ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পাইকাররা তাদের পছন্দ মতো গুরু ছাগল কিনছেন। আবার অনলাইনেও কোরবানির পশু কেনা-বেচা হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, জয়পুরহাট জেলায় ছোট-বড় মিলে জেলায় ১৩ হাজার ৩১৭টি পশুর খামার রয়েছে। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে এবার জেলায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৫টি পশু কোরবানি হবে এমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  বর্তমানে জেলার খামার পর্যায়ে পশু মজুদ রয়েছে  ৩ লাখ ৯ হাজার ২৭১টি।
এরমধ্যে রয়েছে ষাড় গরু ৪৩ হাজার ৬৫৬ টি, বলদ গরু ২৭ হাজার ২২৪টি, গাভী  ৪৪ হাজার ৪৪৯টি, মহিষ ৪১৩টি, ছাগল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৩টি ও ভেড়া রয়েছে ৪৯ হাজার ৬টি। যা জেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত হিসেবে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৬টি পশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। খামারগুলোতে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটাতাজা করণ কর্মসূচীর আওতায় পশু লালন-পালন করা হয়ে থাকে।
জেলায় সাধারণত সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ৯টি পশুর হাট থাকলেও ঈদ উপলক্ষে ছোট-বড় মিলে জেলায় ২৩টি পশুর হাট বসছে। সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে কেনা-বেচা। নগদ টাকা লেনদেনের ঝুঁকি হ্রাস করতে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাংকিং সুবিধা নিয়ে ক্যাশলেস পশু কেনা-বেচার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবার।
পশুর হাটবাজারগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা ও জাল টাকা রোধে চেক পোস্ট বসানো, গ্রামীণ পর্যায়ে যাতে গরু চুরি না হয় সে জন্য চৌকিদার সমন্বয়ে পাহারা জোরদার করা এবং সাধারণ পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে বলে জানান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম।
এ ছাড়াও  অতিরিক্ত টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। গ্রামীণ পর্যায়ে গরু-ছাগলের খামার তৈরিতে সরকারের নানামূখী আয়বর্ধন মূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের  ফলে সাধারণ মানুষ এখন অভাবকে দূরে ঠেলে দিয়ে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন গরু-ছাগলের খামার করে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক জয়পুরহাট জোনাল অফিস এবার প্রাণী সম্পদ খাতে ৩০ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে বলে জানান, জোনাল ব্যবস্থাপক জাফর আলী মল্লিক। জেলা শহরের সবচেয়ে বড় পশুরহাট নতুনহাট ঘুরে খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতনশহর এলাকার খামারী মুনসুর রহমান, ধলাহারের মল্লিকপুর গ্রামের হবিবর মাস্টার, বুলুপাড়ার দুলাল, পাথুরিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী জানান, এবার গরুর বাজার ভালো তাই গরু বিক্রি করে ভালো লাভ করেছেন। ১০০০ কেজি ওজনের গরু সর্বোচ্চ ৭ লাখ টাকায় কেনা-বেচা হয়েছে জয়পুরহাটের পশুরহাটে।  
ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গরুর কিছু পাইকার স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গ্রামে ও হাটে দেখে শুনে কোরবানির পশু কিনছেন, তবে পরিমাণ খুব অল্প বলে জানান, জেলা ডেইরি ফারমার্স এসোসিয়েশন সভাপতি  শাদমান আলিফ মিম রায়হান জয়। এবার ছোট ও মাঝারী সাইজের গরুর চাহিদা বেশী বলে জানান তিনি। অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে কোরবানির পশু কেনাবেচার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পাশাপাশি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পাইকাররা গ্রামে ও হাটে ঘুরে পছন্দ মতো পশু কিনছেন বলে জানান, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন। রোগাক্রান্ত পশু কেনা-বেচা যেন কেউ করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।