বাসস
  ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৩৩
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩০

গণতন্ত্রের পক্ষের মেধাবী কর্মকর্তাদের দায়িত্বে বসান : রিজভীর আহ্বান

ঢাকা, ৮ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষ অবলম্বনকারী মেধাবী কর্মকর্তাদের প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণের সময় সাংবাদিকদের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।
রিজভী আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, পতিত স্বৈরাচারের কীটপতঙ্গ প্রশাসনের মধ্যে থাকলে দেশকে তারা বিপদজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। 
তিনি বলেন, আপনারা মহানুভবতা-মানবতা অবশ্যই দেখাবেন কিন্তু যারা নিজেরা মানবতা কিংবা মহানুভবতা দেখায়নি, যারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী-জনতার ওপর গুলি করতে শেখ হাসিনাকে উদ্বুদ্ধ করেছেন- সেই স্বৈরাচারের কীটপতঙ্গ যদি প্রশাসনের মধ্যে থাকে তারা আপনাদেরকে প্রতি পদে পদে বাঁধা দেবে। তাদেরকে অতিদ্রুত চিহ্নিত করে গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে যারা ছিলেন অথবা যারা নিরপেক্ষ ছিলেন, তারা যে দলেরই সমর্থক হোক না কেন সেসব মেধাবী কর্মকর্তাদের আপনারা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসান। সেটা না হলে দেশকে তারা বিপদজনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। কারণ তাদের পেছনে একটি বিশেষ পরাশক্তির প্রভু রয়েছেন, যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা বহাল তবিয়তে অবস্থান করছেন এবং আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) বিরুদ্ধেই অপষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।   
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এ সময় উল্লেখ করেন, পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান যাতে না ঘটে এবং আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়, কোনো মাকে যাতে আর সন্তানহারা না হতে হয়-সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রিজভী আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন বা পুনরুত্থান মানেই এ দেশ হবে এক ভয়ঙ্কর বধ্যভূমি। এই বধ্যভূমি যাতে তৈরি না হয় তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে তাদেরকেও অন্তরে সততার আলো নিয়ে খুব দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে। সেই পথ, সেই মত তৈরি করতে হবে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকেই। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে মাঠ দরকার সেটি তাদেরকে তৈরি করতে হবে। তবে, সেই পথ তৈরীর ক্ষেত্রে যাতে দীর্ঘ সময় না লাগে সে বিষয়ে তাদেরকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি’র প্রসঙ্গে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, লালমনিরহাটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি আবু সাঈদের মত একজন সাহসী বীর তরুণ’কে যে-কিনা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু সাঈদ) তাকে বলছে সন্ত্রাসী ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। এদের মতো লোকজনই তো প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বহাল আছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটতো প্রশাসনের একটি অংশ তাহলে আজকে সচিবালয় থেকে শুরু করে, বিচারালয় থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কীভাবে এই স্বৈরাচারের দোসররা একটি বিপ্লবের সরকারকে-গণআন্দোলনের সরকারকে ব্যর্থ করতে চাইবে? সেটা আমরা প্রত্যেকেই জানি।
প্রশাসনে যাদের প্রমোশন ও পদায়ন হচ্ছে তাদের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আপনারা যদি মনে করেন আমরা এতদিন বঞ্চিত ছিলাম এখন ভাগ বাটোয়ারা করে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের মতো আমরাও দুর্নীতি করে আমাদের অর্থ লাভের খায়েস পূরণ করবো। তাহলে কিন্তু এই জাতি চিরদিনের জন্য অন্ধকারে চলে যাবে এবং ওই যে পতিত স্বৈরাচার এরা নানাভাবে আসার চেষ্টা করবে।
এ সময় রিজভী আহমেদ জানান, সজীব ওয়াজেদ জয় সিঙ্গাপুরে একটি লবিস্ট ফার্ম ভাড়া করেছে তাদের পক্ষে ওকালতি করার জন্য। এগুলো কিন্তু খুব সাধারণ কথা নয়, এগুলো অত্যন্ত ইঙ্গিতবহ। 
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ডা. জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদলের নেতা ডা. আব্দুল আউয়াল, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও রাজু আহমেদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।