বাসস
  ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:২৭

কিশোরগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পুষ্টিগুণে ভরপুর গাছ আলু ও মেটে আলু

কিশোরগঞ্জ, ২৬ অক্টোবর ২০২৪ (বাসস): জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলায় পুষ্টিগুণে ভরপুর গাছ আলু ও মেটে আলু বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪০২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে এই দু’ধরনের আলুর। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ কোটি টাকা। 

স্থানীয়রা জানান, গাছ আলু চাষের জন্য আলাদা জমি, সার ও বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয় না। এটি অন্যান্ন ফসলের সাথী ফসল হিসেবে ফলন দেয়। এপ্রিল মাসের প্রথমে গাছ আলু রোপণ করা হয়। তখন জমির মাচায় কুমরা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ফলন উঠতে থাকে। সেই সাথে একই মাচায় আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে গাছ অলুর ফলন আসে। আর তখন বর্ষা মৌসুম থাকায় বাজারে অন্য সবজি কম থাকায় এ আলুর বেশ চাহিদা ভালো থাকে। ফলে কৃষকের কাছে এটি আপদকালীন সবজি হিসেবেও পরিচিত। এছাড়াও মেটে আলুর গাছে মাটির নিচেও ৩ কেজি থেকে ২০ কেজি ওজনের আলু হয়। গাছ আলু অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে ও বিনা পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় পাকুন্দিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলার চরতেরটেকিয়া কৃষক আলাউদ্দিন (৫২) ও রায়হান মিয়া (৪৮) জানান, প্রতি একরে এই গাছ আলু চাষের খরচ মাত্র দুইহাজার টাকা থেকে তিনহাজার টাকা।

প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে মাটির উপর ৩০ থেকে ৩৫ মণ ফলন হয় যার প্রতি কেজির বাজারমূল্য ৪০-৪৫ টাকা। আবার মাটির নিচে ২৫ থেকে ৩০ মণ ফলন হয় যা একহাজার চারশ’ টাকা থেকে একহাজার ছয়শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি করা যায়। 

পাকুন্দিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বজলুল রহমান বলেন, উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার মাটি দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ হওয়ায় এবং উপযোগী পরিবেশ থাকায় গাছ বা মেটে আলু মিশ্রও রিলে পদ্ধতিতে বিনাখরচে আবাদ হচ্ছে। তাই স্থানীয় কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এ আলু চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নূর-ই-আলম জানান, অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই গাছ আলু ও মেটে প্রজাতির আলুর কদর বর্তমানে কৃষক ও ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ছে। চলতি মৌসুমে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪০২ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে এই আলু। এর উৎপাদন বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে নানাভাবে কৃষকদেরকে সহযোগীতা করা হচ্ছে। এছাড়াও এ আলু চাষে রোগবালাই কম থাকায় খরচও কম হয়।