বাসস
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫০
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:২৪

একতাই সমবায় আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি, বিভাজন নয় : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি  উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেছেন, একতাই সমবায় আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি, বিভাজন নয়। 

আজ শনিবার ঢাকার আগারগাঁওস্থ সমবায় অধিদপ্তরে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস  উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় সমবায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুনের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক মো.শরিফুল ইসলাম।

উপদেষ্টা হাসান আরিফ আরো বলেন, সমবায়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে একত্রে কাজ করা। কিন্তু সমবায় সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় মামলা মোকদ্দমা আদালতে গিয়েছে। এসব মামলা উচ্চ আদালত এমনকি আপিল বিভাগেও গিয়েছে। মামলা-মোকদ্দমা করে বিভাজন সৃষ্টি কাম্য নয়। 

তিনি বলেন, দুটি মানুষ একসাথে থাকলে মতবিরোধ থাকবে। প্রচলিত সমবায় আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে সেই বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। নীতিগত কারণে যে বিরোধ দুটি পক্ষের মধ্যে থাকে তা আলাপ আলোচনা বা আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু স্বার্থের সংঘাত সমবায়ে হবে,এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

উপদেষ্টা বলেন, সমবায় সমিতিগুলোর মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য বা দ্বন্দ্বগুলো যখন আদালত পর্যন্ত গড়ায় তখনই সমবায় আন্দোলন ব্যর্থ হয়। সমবায় আন্দোলনকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবেনা। এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথের সকল প্রতিবন্ধকতাকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দূর করতে হবে।

সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, ৫৩ বছরে আমরা যে সমাজ গড়েছি সে সমাজকে আমাদের সন্তানেরা ত্যাজ্য করেছে। আমরা এমন সমাজ গড়েছি যেখানে অন্যায় দুর্নীতিতে ছেয়ে গিয়েছিলো। ৫ আগস্টের পূর্বে যা ঘটেছে আমরা সে জায়গায় আর ফিরে যেতে চাই না। এসব স্মৃতি পেছনে ফেলে আমরা সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে আমাদের সন্তানদের স্বপ্নকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একটি সমবায় আন্দোলনের কতটা শক্তিশালী হতে পারে তা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করে দিয়েছে। এই বিপ্লব সকল ধর্ম বর্ণের মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে। সমবায়কে কেন্দ্র করে বিশ্বের অনেক দেশে শতভাগ শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং শতভাগ দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। বাংলাদেশেও সমবায় সমিতিগুলোর মাধ্যমে এই প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সমবায় কাঠামোকে সংস্কার করে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।

জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪ এর প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে সভাপতির বক্তব্যে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব মোসাম্মৎ শাহানারা খাতুন বলেন, সকল সমবায় সমিতি এক হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সমবায় সমিতি। সমবায় কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি করে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হবে৷

সমবায় আদর্শ ও দর্শন যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪ অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে ৭টি সমবায় সমিতিকে এবং ৩ জন সমবায়ীকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। এ বছর বিশেষ ও অন্যান্য শ্রেণিতে শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতির পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (পলওয়েল)। সমিতির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।