শিরোনাম
\ মো. কায়েস উদ্দিন \
নওগাঁ, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় উচ্চ শিক্ষিত সোহেল রানা একজন যুব কৃষি উদ্যোক্তা। প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম এবং প্রচলিত অপ্রচলিত অন্যান্য ফলের বাগান করে অসামান্য সফলতা অর্জন করেছেন। তাঁর প্রকল্পের নাম ‘বরেন্দ্র এগ্রো পার্ক’।
সাপাহার উপজেলা সদরের জয়পুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এরপর সরকারি বা বেসরকারি চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়েছেন।
২০১৮ সালে আম বাগান সৃজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি সোহেল রানা । প্রথমে নিজের জমিতে এবং পরবর্তীতে সাপাহার সরকারি কলেজের অনাবাদী পতিত জমি ২৫ বছরের জন্য লিজ নেন। এ ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন কিছু জমি একই শর্তে লিজ নিয়েছেন।
এসব জমিতে ৫ হাজার আম্রপালি জাতের আম, ৪ হাজার বারী-৪ জাতের , ৪ হাজার গৌরমতী জাতের, আড়াই হাজার ব্যানানা জাতের এবং দেড় হাজার কাটিমন জাতের আম গাছ লাগিয়েছেন।
এ ছাড়াও বিদশি জাতের জাপানি মিয়াজাকা, আমেরিকার আস্টিন ও কেইট ও অস্ট্রেলিয়ার ক্যাসিনটন প্রাইড আমগাছ লাগিয়েছেন। সব মিলিয়ে ২৫ জাতের প্রায় ২৫ হাজার গাছ লাগিয়েছেন সোহেল রানা।
এ ছাড়া এই পার্কে কমলা, মাল্টা, এ্যাভোক্যাডো ও গ্লাডিওয়ালস ফুলের চাষ করেও সাফলতা পেয়েছেন তিনি।
সোহেল রানা জানান এ পর্যন্ত ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। এই প্রকল্পে আমের মওসুমে ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক কাজ করে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক কাজ করে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক।
ইতিমধ্যে গাছগুলো বড় হয়েছে। এখন প্রত্যেক গাছে আম ধরে। বর্তমানে প্রতি বছর ৮০ লাখ টাকার আম বিক্রি করেন বলে জানিয়েছেন এই উদ্যোক্তা। খরচ বাদ দিয়ে তিনি নিট ৪০ শতাংশ অর্থাৎ কমপক্ষে ৩২ লাখ টাকা লাভ করে থাকেন। তাঁর এই সফলতা এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবককে আকৃষ্ট করেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোহেল রানার বরেন্দ্র এগ্রো ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এই উদ্যোগ অভাবনীয় সাফলতা অর্জন করেছে। কেউ যদি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করবে অধিদপ্তর।