শিরোনাম
কিশোরগঞ্জ, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাড়ির আঙিনার মাত্র দুই শতক জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার সবজি। পরিশ্রম আর যত্নের ফলে ফলন হয়েছে বেশ ভালো। এতে সফিকুলের বাড়তি আয় হচ্ছে। সারা বছরের পরিবারের সবজির চাহিদা মিটে যাচ্ছে সহজেই।
শুধু তাই নয়, উদ্বৃত্ত সবজি প্রতিবেশীদের কাছে বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করা সম্ভব হচ্ছে। এভাবে ছোট পরিসরের জমিকে কাজে লাগিয়ে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা এনেছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভার ঘোনাপাড়া এলাকার মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে মুদি ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম হুমায়ূন। করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় এমন সবজি বাগান করেছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে সারাদেশে অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন নামে প্রকল্প চালু হয়।
করিমগঞ্জ উপজেলায় পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের মোট ১২০০ পরিবারকে পুষ্টি বাগান প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ৯৩২টি পরিবারে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে, যা প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি পরিবারগুলোকে শিগগিরই এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরজমিনে ঘুরে জানা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নে ১০০টি পরিবারকে পুষ্টি বাগান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এসব পরিবারের জন্য বিনামূল্যে পুষ্টি বাগান ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নেট (বেড়া), ঝাঁজরি, এবং বছরের তিনটি মৌসুমে বিভিন্ন প্রকার সবজির বীজ ও সার।
বারঘরিয়া ইউনিয়নের ভূষারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিছ আলী। তার সংসারে ছোট-বড় মিলে মোট বারজন সদস্য। কৃষি অফিস থেকে তিনি একটি পুষ্টি বাগান পেয়েছেন, যা তার পরিবারের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এ বাগান থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়ে পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে তিনি কিছু সবজি প্রতিবেশীদের কাছেও বিক্রি করতে পারেন। ইদ্রিছ আলী জানান, কৃষি অফিসের মাঠকর্মীরা নিয়মিতভাবে তার পুষ্টি বাগানের খোঁজখবর রাখেন, যা তাকে আরও উৎসাহিত করে।
কিরাটন ইউনিয়নের হাসমহল গ্রামের কৃষক রমজান মিয়া জানান, তার সবজি বাগানের জন্য প্রয়োজনীয় সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে পেয়েছেন। এ উদ্যোগের ফলে তিনি বাজার থেকে সবজি কিনতে হয় না। নিজের বাগান থেকেই পরিবারের সবজির চাহিদার বেশির ভাগ অংশ মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে শুরু হওয়া একটি প্রকল্প ২০২৬ সালে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার ৯৩২টি পরিবারে পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ কাজের ৮৫ শতাংশ। ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শতভাগ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার ১২০০ পরিবারে পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা হয়েছে। কৃষকদের পুষ্টি বাগানে আগ্রহী ও যত্নবান করতে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।