বাসস
  ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:১০

পহেলা বৈশাখ নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে: পানি সম্পদ উপদেষ্টা

ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান বলেছেন, আগামী পহেলা বৈশাখে স্থানীয় নামসহ নদ-নদীর একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, 'আমরা বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ১ হাজার ১০০ এর কিছু বেশি নদ-নদীর খসড়া তালিকা পেয়েছি।  আরো যাচাই-বাছাই এর কার্যক্রম চলছে। আমরা ৬৪ জেলায় খাল, নদ-নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেবো যাতে কেউ আগামীতে খাল, নদ-নদী আর দখল করতে না পারে।'

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান আজ  ঢাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) কর্তৃক আয়োজিত 'নদ-নদী ও পানির ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক এক বিশেষ সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে পানি সম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘যশোরের ভবদহের  সমস্যাটা খুবই জটিল হয়ে গেছে, এতটা বছর এটা কোনোভাবেই এড্রেস করা হয়নি। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড সকাল ৮ টা  থেকে রাত ৮টা /৯টা  পর্যন্ত পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশন করছে জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি সরাতে। ভবদহ  এলাকায় স্লুইসগেটের ভিতরে উচ্চতা নিচু আবার স্লুইসগেটের বাইরে নদী ভরাট হয়ে গেছে অর্থাৎ উঁচু হয়ে গেছে। যার ফলে স্লুইসগেট খুলে দেয়া হলে পানি বের না হয়ে উল্টো ভিতরে ঢুকে পড়ে।’

তিনি বলেন, ভবদহ এলাকার সমস্যা সমাধান করতে হলে আমডাঙ্গা খাল আরো গভীর ও প্রশস্ত করে খনন করতে হবে।  সেখানে পুনর্বাসনের বিষয় আছে। কিছু মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। এগুলো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। টিআরএম এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একদল তেড়ে আসে তারা বলে টিআরএম করা যাবেনা।

উপদেষ্টা বলেন, ভবদহের সমস্যা সমাধানে আশা করি ২৫ জানুয়ারির মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ জায়গা থেকে পানি অপসারণ করতে সক্ষম হবো এবং ৮০ ভাগ জায়গায় মানুষ চাষাবাদ করতে পারবে।

তিনি বলেন, ঢাকার চার পাশের চারটি নদী এবং দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে নদী দখলও দূষণমুক্তকরণের কর্মপরিকল্পনা আমরা চূড়ান্তকরনের দিকে যাচ্ছি।

উপদেষ্টা  বলেন, করোতোয়া নদীর প্রভাবশালী দখলদার যিনি, তিনি নিজে এখন রাজি হয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে মিলে তিনি তার দখল সেখান থেকে তুলে নেবেন। এ কাজটা আমরা সহসাই করে ফেলতে পারবো।

সম্মেলনে উপস্থিত এক জনের  প্রশ্নের উত্তরে  উপদেষ্টা বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি এপ্রিলে শেষ হবে। দুইটা সিজন লাগবে এই বিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করতে। একটা হচ্ছে বৃষ্টির সিজন, আরেকটা হচ্ছে শীতের সিজন। বৃষ্টির সিজনের স্টাডি হয়েছে এখন শীতের সিজনের স্টাডি শেষে অর্থের সংস্থান করে আশা করি এ কাজের উদ্বোধন করতে পারবো।

তিনি বলেন, নোয়াখালীতে মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙ্গে যাওয়াতে ওইখানে রাতারাতি চর জেগে উঠে। যার ফলে মানুষের বাড়ি-ঘর ভাঙ্গন হচ্ছিল, নদী ভাঙ্গন হচ্ছিল। ১৫ দিনের মধ্যে ওখানে ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করে দেয়ার ফলে ওই এলাকায় মানুষের বাড়িঘরগুলো নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা পেয়েছে।

বাপা'র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে নদ-নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিশেষ এ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর বৈশ্বিক সমন্বকারী এবং বাপা'র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে সারাদেশে পরিবেশ আন্দোলনের সাথে যুক্ত বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।