সরকারি আদেশ অমান্য করে বরগুনায় নদীতে নিষিদ্ধ জালে চলছে মাছ শিকার

বাসস
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ১৪:৪১
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনায় নদীতে নিষিদ্ধ জালে চলছে মাছ শিকার। ছবি: বাসস

।। খায়রুল বাশার ।।

বরগুনা, ৫ মে ২০২৫ (বাসস): সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই জেলার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে ছোট ফাঁস জাল ব্যবহার করে অবাধে চলছে মাছ শিকার। এতে মাছের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশ বিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।

মৎস্য আইনে মাছের পোনা সংরক্ষণে সোয়া চার ইঞ্চির কম ফাঁস জাল ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে আধা ইঞ্চির কম থেকে পৌনে এক ইঞ্চির এসব নিষিদ্ধ বাঁধা জাল, ঘোপজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালে নির্বিচারে ইলিশের পোনা মারা হচ্ছে।

এসব নদীতে নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের যে পরিমাণ পোনা নিধন হচ্ছে তাতে আগামী মৌসুমে ইলিশ মাছ আহরণে চরম সংকট দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলার তিনটি নদীতে সাতশ'র বেশি নৌকায় অসাধু জেলেরা অবৈধ জাল দিয়ে মারছে কোটি কোটি ইলিশের পোনা। ইলিশের এই পোনাকে এলাকার হাটবাজারে ‘চাপিলা মাছ’ বলে বিক্রি করছে জেলেরা। যেখানে এই ইলিশের পোনা বিক্রয় করা ও ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেখানে বিভিন্ন শহর ও পৌর এলাকার হাটবাজারসহ গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ইলিশের এই পোনা। এছাড়া এই ইলিশের পোনা পরবর্তীতে ‘শুঁটকি’ বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাসা জাল দিয়ে জাটকা, পোয়া, তপসি, টেংরাসহ অন্য প্রজাতির অনেক মাছ আর পোনা ধরা পড়ে। জেলেরা বিক্রিযোগ্য মাছ বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে। আর হাটবাজারে বিক্রির অযোগ্য মাছ শুঁটকি পল্লিতে বিক্রি করে দেয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিষিদ্ধ বাঁধা, গড়া ও বেহুন্দি জাল দিয়ে শিকার করা মাছের মধ্যে ইলিশের পোনা, ডিমওয়ালা গলদা চিংড়ি, পাঙ্গাসের পোনাসহ নদীর বিভিন্ন ছোট মাছ থাকে। বাঁধা জালে নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের পোনা মারা পড়ছে। জেলেরা ইলিশের মরা ছোট পোনাগুলো নদীতে ফেলে দিয়ে আসে। দেড়-দুই ইঞ্চি সাইজের পোনাগুলো প্রকাশ্যে খোলা ডাকে বিক্রি করছে। বাজারগুলোতে স্থানীয় মৎস্য বিভাগের কোনো নজরদারি না থাকায় এ অনাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এভাবে অবৈধ জালে ইলিশের পোনা শিকার করলে ইলিশের বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। নদ-নদীতে পানি থাকবে কিন্তু মাছ থাকবে না।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, আমরা গত এক মাসে ৫০টির বেশী অভিযান পরিচালনা করেছি। যেহেতু জেলায় তিনটি নদী আর আমাদের জনবল কম, ফলে সব জায়গায় পৌঁছানো আমাদের পক্ষে অনেক সময়েই সম্ভব নয়। এই সুযোগে অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনা ধরে চাপিলা বলে গোপনে বিক্রি করছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা নদীতে টহল জোরদার করেছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় বিষয়ে সবৈর্ব্য মিথ্যাচারের প্রতিবাদ
রেলওয়ের ওয়াশিংপ্লান্টে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ১০ম দিনের শুনানি মঙ্গলবার
৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি
আমরা সবার জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে চাই: সিলেটে ডা. শফিকুর রহমান
আর্থিক খাতে জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নির্দেশিকা জারি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ডেঙ্গু বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচেতনতামূলক বার্তা
প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই আমরা জুলাই সনদ নিতে চাই : হাসনাত আব্দুল্লাহ
অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক উন্নয়নে পর্যাপ্ত তহবিল ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের আহ্বান বাংলাদেশের
কোনো অবস্থাতেই দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি সমর্থন করা হবে না : ডা. জাহিদ
১০