শেরপুরে টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ নদীর পানি, পাহাড়ি ঢলে বন্যার আশঙ্কা

বাসস
প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ২১:২৭ আপডেট: : ২০ মে ২০২৫, ২১:৩৪
ছবি : বাসস

শেরপুর, ২০ মে, ২০২৫ (বাসস) : শেরপুরে গত তিনদিনের ভারি বর্ষণ এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলায় আকস্মিক বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার নদীপাড়ের মানুষ।

জানা যায়, শেরপুরে গত বছরের অক্টোবরে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজারও ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র ও ফসলি ক্ষেত। গেলবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে না নিতেই এবারও বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের হাজারও মানুষ। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ঘোলা পানিতে সেই আশঙ্কা আরও বেড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত অক্টোবরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মহারশি ও ভোগাই নদীর বাঁধ মেরামতই এখনও শেষ হয়নি। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মহারশি নদীর পূর্ব পাশে ২ হাজার ১৬০ মিটার ও  পশ্চিম পাশে ১ হাজার ৩৪০ মিটার বাঁধের কাজ শুরু হলেও পুরোপুরি শেষ হয়নি। এছাড়া বাঁধে মাটির বদলে বালু ব্যবহার করায় বাঁধটি টেকসই হবে না বলে দাবি তাদের।

ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন আহমেদ নগরের বাসিন্দা ইসলাম মিয়া (৪৫) জানান, প্রতি বছর বন্যায় আমাদের ভোগান্তি অনেকটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে রান্নাঘর ও টিউবয়েল ডুবে যাওয়ায় দেখা দেয় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। কিন্তু নদী পাড়ের মানুষের কথা কেউ চিন্তা করে না। যেখানে আমাদের প্রয়োজন স্থায়ী বাঁধ। সেখানে কর্তৃপক্ষ কয়েক ব্যাগ জিও ব্যাগ ফেলে দায়িত্ব শেষ করে।

একই গ্রামের কৃষক শরাফত আকবর (৫০) বলেন, জমিতে এখনো বোরো ধান কাটা বাকি। যেগুলো কেটেছি সেগুলো মাড়াই করতে পারিনি। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বাড়ছে। যদি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তাহলে ধান জমিতেই পচে নষ্ট হবে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখিনুজ্জামান জানান, শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চেল্লাখালি নদীর পানি বিপদসীমার ১০৬ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর ভাঙন রোধে প্রায় ৮ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত আছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের সতর্কবার্তা পেয়ে কৃষি বিভাগের তরফ থেকে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার ৮৪ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বাকি ধানও দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে ফেলতে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, আগাম বন্যার আশঙ্কা থাকায় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য বন্যা কবলিত এলাকার একটি তালিকা তৈরি করে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে বরাদ্দ পেলে শুকনো খাবার এবং ঢেউটিন ক্রয় করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আমরা জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত: সালাহউদ্দিন আহমেদ 
দুধ আমদানি কমাতে সারাদেশে চিলিং পয়েন্ট স্থাপন করা হবে : ফরিদা আখতার
ভারতে হাসিনা-এস আলম গ্রুপের প্রধানের বৈঠক নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ 
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
ইজি বাইকে পূর্ণ যাত্রী বহন করলে যানজট কমবে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে : গবেষণা
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০.৫৯ বিলিয়ন ডলার
কাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে প্রথম রিলিজ স্লিপের ফল প্রকাশ
গণতন্ত্র ও লিঙ্গসমতার ওপর গুরুত্বারোপ তারেক রহমানের
সংশোধনী আসছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইনে, মতামত চেয়েছে মন্ত্রণালয়
রাজশাহীর রেশম ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার
১০