যুক্তরাষ্ট্রের এভারগ্লেডসে খরা: হুমকিতে প্রাণিকুল ও পর্যটনশিল্প

বাসস
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১০:০৯
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ২২ মে, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম জলাভূমি ফ্লোরিডার এভারগ্লেডস ন্যাশনাল পার্কে ভয়াবহ খরায় শুধু বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলই বিপর্যস্ত হয়নি, বড় ধাক্কা খেয়েছে এ অঞ্চলকেন্দ্রিক পর্যটনশিল্পও।

যুক্তরাষ্ট্রের পেমব্রোক পাইন্স থেকে এএফপি জানায়, দক্ষিণ এভারগ্লেডসে সাতটি এয়ারবোটের মালিক মার্শাল জোন্স বলছেন, তার ব্যবসা প্রায় সম্পূর্ণভাবে থমকে গেছে। তার একটি নৌযান এখন পড়ে আছে একেবারে শুকিয়ে যাওয়া খালের পাথুরে তলায়।

৪৬ বছর বয়সী জোন্স বলেন, ‘বেশির ভাগ বন্যপ্রাণী বেঁচে থাকার জন্য পানির ওপর নির্ভর করে। অথচ এখন এভারগ্লেডসে প্রকৃত জলাধার বলতে কিছুই নেই, শুধু কিছু কৃত্রিম খাল ছাড়া।’

মিয়ামি নদীর ধারে অবস্থিত ‘ম্যাক’স ফিশ ক্যাম্প’-এর এই মালিক জানান, এ খরার প্রভাবে কালো বাস, ক্যাটফিশের মতো মাছের প্রজাতি সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে; জলাভাবে অ্যালিগেটর, কচ্ছপ, সাপ ইত্যাদি বাধ্য হচ্ছে অন্যত্র আশ্রয় নিতে—তাতে বাড়ছে অতিরিক্ত উত্তাপ ও মৃত্যুঝুঁকি।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তরের মিয়ামি শাখার প্রধান রবার্ট মোলেদা জানিয়েছেন, সাধারণত শুষ্ক মৌসুম অক্টোবর থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে, তবে এবার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে, ফলে খরার মাত্রা অত্যন্ত চরম।

পর্যটনেও প্রভাব

এ প্রভাব পড়েছে পর্যটনেও। জোন্স বলেন, ‘টানা ৩২ দিন আমি কোনো পর্যটক নিয়ে নৌভ্রমণে যেতে পারিনি। এটা আমার পর্যটন ব্যবসার সবচেয়ে ব্যস্ত মৌসুম। এসময়েই ৫০ হাজার ডলার লোকসান গুনতে হলো।’

তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালের পর এমন খরা তিনি দেখেননি।

এভারগ্লেডস ফাউন্ডেশনের প্রধান বিজ্ঞানী স্টিভ ডেভিস বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শুধু প্রাকৃতিক খরার ফল নয়; গত শতাব্দীতে মানুষের পানি-নিয়ন্ত্রণমূলক প্রকল্পগুলো এ সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে।

আগে বর্ষাকালে (মে-অক্টোবর) যে পানি এভারগ্লেডসের উত্তরে জমত, তা ধীরে ধীরে দক্ষিণে নেমে এসে শুষ্ক মৌসুমে আর্দ্রতা বজায় রাখত। কিন্তু শহর ও কৃষি সম্প্রসারণের জন্য সেই পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় উদ্যোগ

ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার কয়েক বছর আগে ক্ষতিপূরণমূলক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যাতে পুনরায় উত্তরের পানি দক্ষিণে আসতে পারে। এর জন্য তৈরি হচ্ছে খাল, বাঁধ, জলনিষ্কাশন কাঠামো ও পানিপাম্প।

ডেভিস বলেন, ‘আমরা যদি পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করি এবং প্রয়োজনমতো তা সরবরাহ করতে পারি, তবে পুরো বাস্তুতন্ত্রের সহনশীলতা বাড়বে।’

তবে সেই সহায়তা এখনও এসে পৌঁছেনি জোন্সের কাছে। তার চোখ এখন আকাশের দিকে।

‘আমরা শুধু বৃষ্টির অপেক্ষায়। প্রকৃতি শিগগিরই দেবে। আজ আমাদের এখানে মৌসুমি বৃষ্টির প্রথম দিন। অথচ পুরো আকাশ একেবারে পরিষ্কার—একটিও মেঘ নেই। তবে বৃষ্টি আসবে, নিশ্চয়ই আসবে,’ বলেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
বিচার বিলম্বিত হলে, ন্যায় বিচার ক্ষুণ্ন হয় : অ্যাটর্নি জেনারেল
বুড়িমারী স্থলবন্দরে এসেছে ভুটানে পণ্য পরিবহনের প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রাক
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির পথসভা 
সিরিজে টিকে থাকতে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া বাংলাদেশ
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত কোনো ভর্তুকি পায় না : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
নোয়াখালী এক্সপ্রেসের হয়ে বিপিএল মাতাবেন চার্লস
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিডিইএফের সভাপতির সাক্ষাৎ
সিলেটে কিশোর তপু হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক ৩
অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টেও অস্ট্রেলিয়া দলে নেই কামিন্স
১০