
ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অন্তর্বর্তী সরকার চারটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে খসড়াগুলোর নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
অনুমোদিত চারটি অধ্যাদেশ হলো-দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫, মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশ ২০২৫, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫।
বৈঠক শেষে বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশের মাধ্যমে কমিশনকে আরও কার্যকর করা হয়েছে। পাঁচজন কমিশনার থাকবেন, যার মধ্যে একজন বা দুইজন আইটি বিশেষজ্ঞ এবং একজন নারী কমিশনার থাকবেন। কমিশনের কাজের প্রতিবেদন ছয় মাস অন্তর অনলাইনে প্রকাশ করা হবে এবং কমিশনের কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশের মূল লক্ষ্য হলো ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং ট্রাফিকিং প্রতিরোধ করা। আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত, সম্পদ জব্দ এবং প্রয়োজনে বিদেশ যাত্রা বন্ধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মানবপাচারের বিজ্ঞাপন বন্ধ করা এবং ভুক্তভোগী সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও আইনটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার।
রাজউক অধ্যাদেশে রাজধানী উন্নয়নের নিয়ন্ত্রণ ও পরিকল্পনা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। বিধান অনুযায়ী ভূমি পুনর্গঠন, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ, খেলার মাঠ ও উদ্যানের সুরক্ষা, অনুমোদিত নকশার ব্যতীত ভবন নির্মাণে শাস্তি এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা অপসারণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া রাজউকের চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্মচারীরা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বার্থে কোনো শেয়ারে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ সংশোধনের মাধ্যমে কমিশনকে ‘ন্যাশনাল প্রিভেন্টিভ মেকানিজম’ হিসেবে কাজ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা তাদের দেশের বিভিন্ন আটককেন্দ্র পরিদর্শন করার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করার সুযোগ করে দেবে। এই সংশোধনের ফলে কমিশনের আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে, যা তাদের কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করবে।
শফিকুল আলম আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই চারটি অধ্যাদেশ দেশের প্রশাসন ও আইন প্রণয়নকে আরও শক্তিশালী করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।’