ঢাকা, ২১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিআইডব্লিউটি’র উদ্যোগে আজ শনিবার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফিক দিবস-২০২৫’ উদযাপিত হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এ উপলক্ষ্যে ঢাকায় সামরিক জাদুঘর মাল্টিপারপাস হলে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান।
সেমিনারে সমুদ্র গবেষণা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার সদস্যবৃন্দ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাগণ, হাইড্রোগ্রাফি ও ওশানোগ্রাফি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণা পরিচালনাকারী ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে, ‘সী-বেড ম্যাপিং : এনাবলিং ওশেন অ্যাকশন’ যা একটি সমৃদ্ধ সামুদ্রিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে হাইড্রোগ্রাফির উল্লেখযোগ্য ভূমিকাকে নির্দেশ করে।
সমুদ্রে দেশি-বিদেশি জাহাজসমূহের নিরাপদ চলাচল, সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই আহরণ ও কার্যকরী ব্যবহারে হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্ত মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে সমুদ্র ব্যবস্থাপনা এবং ব্লু ইকোনোমির নিমিত্তে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সমুদ্রতলের পরিবর্তন, অফ-শোর অ্যাকুয়াকালচার এবং মৎস্য উৎপাদনশীলতা, সামুদ্রিক জিনগত সম্পদ বৃদ্ধি এবং সমন্বিত মহাসাগর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে সমুদ্রতলের মানচিত্রায়ণসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
বক্তারা আলোচনার মাধ্যমে দিবসটির প্রতিপাদ্য ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্তের প্রায়োগিক ব্যবহারের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদের নিরাপদ, টেকসই ও কার্যকর উপযোগিতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়।
এছাড়াও, বিভিন্ন মেরিটাইম সংস্থাসমূহের অংশগ্রহণে হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সমুদ্র বিজ্ঞানী, সমুদ্র ব্যবহারকারী সংস্থা ও দেশসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে জ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয় সাধন হবে বলে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার ৭০তম দেশ হিসেবে সদস্যপদ লাভ করে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থার দেশীয় প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৮৩ সাল হতে সমুদ্র ও সমুদ্র বন্দর সংলগ্ন নদীপথে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ পরিচালনা এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নটিক্যাল চার্ট প্রকাশের দায়িত্ব পালন করে আসছে। কাগজে মুদ্রণের পাশাপাশি এ সকল চার্ট ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেও প্রকাশিত হচ্ছে, যা বঙ্গোপসাগরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার জাহাজসমূহের নিরাপদ চলাচলে অপরিহার্য।
হাইড্রোগ্রাফিক তথ্য-উপাত্ত সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনা, মৎস্য ও খনিজ সম্পদ আহরণ, সুনামি, উপকূলীয় ভূমি ব্যবস্থাপনা, সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।
এ সকল তথ্য-উপাত্ত অদূর ভবিষ্যতে মেরিন স্পেশাল ডাটা ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রস্তুতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
হাইড্রোগ্রাফি সংক্রান্ত উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহ সমুদ্র অঞ্চলকে আরও নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও উৎপাদনশীল ভূমিকায় উন্নীত করতে সক্ষম হবে।