টাঙ্গাইলের একটি খাল দখল মুক্ত করলো প্রশাসন

বাসস
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১৪:২০
ছবি : বাসস

টাঙ্গাইল, ২২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : জেলার ভূঞাপুর পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের একমাত্র মাধ্যম শিয়ালকোল-পশ্চিম ভূঞাপুর খালটি দীর্ঘ ৫০ বছর পর অবশেষে দখল মুক্ত করেছে প্রশাসন।

ভূঞাপুর পৌর এলাকার শিয়ালকোল ব্রিজ থেকে শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার খালটি দখলমুক্ত করে খনন কাজ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। ফলে দীর্ঘ ৫০ বছর পর খালটি পুনরুদ্ধার হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

স্থানীয় জানা যায়, এক সময়ের জনগুরুত্বপূর্ন এ খালটি উপজেলার শিয়ালকোল হাট থেকে বিরামদী হয়ে পশ্চিম ভূঞাপুর লৌহজং নদীর সঙ্গে সংযোগ ছিল। সে সময়ের এলাকার জনবহুল বানিজ্যিক বন্দরনগরী ছিল শিয়ালকোল হাট। এ নগরীর অধিকাংশ মালামাল বহনের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌপথ। এ খাল দিয়ে চলাচল করতো বড় বড় নৌকা। এ খালের কারণেই গড়ে উঠে ছিল শিয়ালকোল হাট। 

কিন্তু কালের বিবর্তনে এ খালটি নব্যতা হারাতে থাকে। আর সে সুযোগে পর্যায়ক্রমে বেদখল হয়ে থাকে খালের দুই পাড়। বর্তমানে কোথাও কোথাও সামান্য খালের চিহ্ন থাকলেও অধিকাংশ জায়গাই বেদখল হয়ে গেছে। 

খালের মধ্যে কোন কোন জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে। ফলে সামান্য বন্যা বা ভারি বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধার সৃষ্টি শহরের বেশ কয়েটি মহল্লা। এর মধ্যে বেশির ভাগ সমস্যা সৃষ্টি হয় ঘাটান্দি ও ফসলান্দি মহল্লায়। 

এ ছাড়া চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পরে ভূঞাপুর বাজারসহ আশ পাশের এলাকা। জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনাতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

দীর্ঘদিনের এই অব্যবস্থাপনার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, বিভিন্ন সরকারের আমলে প্রশাসনের অবহেলা এবং প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় খালটি দখল হয়ে যায়। ফলে ভূঞাপুর বাজার, ঘাটান্দি, ফসলান্দি, এবং আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়ে ওঠে নিত্যদিনের দুর্ভোগ।

সাম্প্রতিক সময়ে জেলা প্রশাসনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে খালটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়া হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে গত ২ জুন এই খাল খনন কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আব্দুল্লাহ খান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তারিকুল ইসলাম এবং ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম রেজাউল করিম।

এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষক সোনা উল্লা বলেন, বর্ষা এলেই আমাদের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে যেত এবং পানি দীর্ঘ দিন থাকায় জমির মাটি নষ্ট হয়ে নোংরা হয়ে যেতো। এই খাল খনন কাজ শেষ হলে সেটা আর থাকবে না।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই বাসা থেকে বের হতে পারতাম না। আমাদের এলাকা এখন মুক্ত বাতাস পাবে। এতদিন যা শুধু দুর্ভোগ ছিল, এখন তা উন্নয়নে রূপ নেবে।

ভূঞাপুর পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, প্রথম অবস্থায় এই খালটি উদ্ধার করা হলো। পর্যায়ক্রমে আমরা সকল দখলকৃত খাল উদ্ধার করবো।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই খালটি বেদখল ছিলো। শহরের বিভিন্ন জায়গাতে জলাবদ্ধা সৃষ্টি হতো। আর খালটি পুনরুদ্ধার করে জনদুর্ভোগ কমাতে আমরা খাল খনন কাজ শুরু করেছি। 

এছাড়াও খালের পাশ দিয়ে আমরা গাছ লাগাবো যাতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়। এ ধরনের অভিযান আমাদের অব্যাহত থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জাতীয় স্কুল দলগত দাবায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল চ্যাম্পিয়ন
ডেঙ্গুতে ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩২৯
ক্লাব বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেল ইন্টার, ডর্টমুন্ড
শাপলা প্রতীক চেয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন এনসিপি’র
হিন্দু কিশোরী অপহরণের গুজব খণ্ডন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য সুশীল সমাজের ক্ষমতায়নের ওপর জোর ইইউ’র
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ফরাসি প্রতিরক্ষা পরিষদের বৈঠক আহ্বান মাখোঁর
হৃদরোগীদের মাঝে আশার সঞ্চার, চমেকে আসছে এনজিওগ্রাম মেশিন
বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ও গবেষণায় অবহেলা করবে না : সালাহউদ্দিন আহমেদ
চট্টগ্রামে একদিনে করোনায় দুই মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১২
১০