নড়াইল, ২৮ জুন ২০২৫ (বাসস) : অবিরাম বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় নড়াইল পৌরবাসী চরম দুর্ভোগের কবলে পড়েছে। পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা যেন নিত্যদিনের দৃশ্য। পর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বসতঘর থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যায়। পৌর এলাকার অধিকাংশ রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে। কোথাও কোথাও হাঁটু পরিমাণ পানি জমে।
সরেজমিনে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহ ধরে হওয়া বৃষ্টিতে নীচু এলাকার বাড়ির উঠানে হাঁটু পানি এবং ঘরের মেঝেতে পানি ওঠায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন পৌরবাসী। প্রতি বর্ষা মওসুমে আবাসিক এলাকার পাশাপাশি সড়কগুলো তলিয়ে যায় বৃষ্টির পানিতে। হাটা-চলায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পৌরবাসীর। স্কুল-কলেজে যেতেও দুর্ভোগে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
কুড়িগ্রাম ও ভওয়াখালী এলাকার একাধিক বাসিন্দা বাসস প্রতিনিধিকে জানান, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের মধ্য পানি ওঠে। রাস্তায় পানি জমে যায়। যে কারণে চলাফেরা বিঘ্নিত হয়।
নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ফারদিন শাহরিয়ার খান জানায়, বৃষ্টি হলেই রূপগঞ্জ মুচির পোল থেকে উত্তর দিকে নেমে আসা রাস্তা প্রেসক্লাব পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকে। এ কারণে স্কুলে যেতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
শহরের রূপগঞ্জ গোহাটখোলার বাসিন্দা মর্জিনা বেগম বলেন, মুশলধারে বৃষ্টি হলেই আমাদের বসতঘরের মধ্যে হাঁটু পানি হয়ে যায়। রান্নাঘর, টিউবওয়েল ও টয়লেট তলিয়ে যায়। রান্না বন্ধ হয়ে যায়। বিছানা বালিশ-কাঁথা পর্যন্ত পানিতে ভিজে যায়।
একই এলাকার গৃহবধূ সুলতানা জানান, মুশলধারে বৃষ্টি হলেই আমাদের মহল্লার সমস্ত বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি বেশি হলে আমাদের কষ্ট বাড়ে।
নড়াইল পৌর এলাকার দুর্গাপুর, ভওয়াখালী, গোহাটখোলা, ভাদুলিডাঙ্গা, আলাদাতপুর, হাটবাড়িয়া, বরাশুলা ও মহিষখোলাসহ অধিকাংশ এলাকার চিত্র একই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পৌর এলাকায় পর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে বর্ষা মওসুমজুড়ে পানিবন্দি থাকতে হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন পৌর এলাকার বাসিন্দারা।
পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে ২৮.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত নড়াইল পৌরসভাটি ১৯৯৯ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। শহরের জন্য প্রয়োজন ৫৫ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা। অথচ এ এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা আছে মাত্র ৩ কিলোমিটার। যেটি নির্মিত হয় আরও ২০ বছর আগে। পরবর্তীতে নতুন করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করা হয়নি।
নড়াইল পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না বলেন, প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া সাপেক্ষে ড্রেনেজ নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার সমাধান করা হবে। জরুরি ভিত্তিতে জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।