চুনতি অভয়ারণ্যে রেললাইনে হাতির পাল

বাসস
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৬:০৪
ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম, ২৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে আসছিল সৈকত এক্সপ্রেস। পথে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকায় দেখা মিলে হাতির পাল। 

হাতি দেখে ট্রেন থামান চালক। হুইসেল দেওয়ার পর রেললাইন থেকে সরে পড়ে হাতির পাল। কিন্তু এরপরই একটি হাতি ট্রেনের বগিতে আক্রমণ করে। 

এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেন চালকের দক্ষতায় রক্ষা পায় হাতির পাল ও যাত্রীরা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

বুধবার (২৩ জুলাই) ট্রেন চালক আবদুল আউয়াল জানান, প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত পৌনে ৯টার দিকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় সৈকত এক্সপ্রেস। ট্রেনটি ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে লোহাগাড়ার অভয়ারণ্যে পৌঁছে। 

এ সময় নিয়মানুযায়ী ওই এলাকায় চার কিলোমিটার পথে ট্রেনের গতি ২০ কিলোমিটার ছিল। 

ধীরগতিতে চালানোর কারণে এবং ট্রেনের হেডলাইটের আলোতে চালক রেলপথের ওপর হাতিকে দেখতে পান। 
প্রথমে আউয়াল কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে হাতির পাল দেখার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ‘ব্রেক’ চাপতে থাকেন। 

এক পর্যায়ে জরুরি ব্রেকে চাপ দেন তিনি। এতে কাজ হয়। হাতির কাছাকাছি পৌঁছে ট্রেনটি থেমে যায়। 
সেখানে ৪ থেকে ৫টি হাতি ছিল বলে ধারণা ট্রেন চালকের।

তিনি বলেন, ট্রেন থেমে যাওয়ার পর, যাত্রীরা রেললাইনের পশ্চিম পাশে ব্যারিয়ারের ভেতর একটি হাতি দেখতে পান। তখন হাতিটি রেললাইনের নিচে ছিল। যাত্রীদের কেউ কেউ হাতি দেখে আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন। পরে হাতিটি কাছে এসে ট্রেনের একপাশে ধাক্কা দিতে থাকে। 

এ সময় দৃশ্যটি যাত্রীদের কেউ কেউ নিজেদের মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন।

ট্রেনচালক আবদুল আউয়াল জানান, হাতি দেখার পর গতি কমানো শুরু করি। এক পর্যায়ে জরুরি ব্রেক করি। হাতির কাছাকাছি গিয়ে ট্রেন থামে। পরে টানা হুইসেল দিলে হাতিগুলো রেললাইন থেকে নেমে যায়। তবে এর ১-২ মিনিট পর বগিতে ধাক্কা দেয় একটি হাতি। ট্রেনের গার্ডকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ট্রেন চালিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিই।

কক্সবাজার থেকে আসা সৈকত এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম স্টেশনে এসে পৌঁছায় রাত ১টায়। 

আবদুল আউয়াল বলেন, এই রেলপথে কিন্তু আগেও ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মারা গিয়েছিল। আবার একই ধরনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কিছু হয়নি। পরবর্তী সময়ে আবারও এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই হাতির যেন ক্ষতি না হয়, সে জন্য দুর্ঘটনা এড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। 

বিচক্ষণতার সঙ্গে ট্রেন থামানো এবং এতে হাতিগুলো রক্ষা পাওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চালকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল-১০ ট্রেনের ধাক্কায় একটি বন্য হাতি আহত হয়। 

দুর্ঘটনার দুই দিন পর, ১৫ অক্টোবর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু ঘটে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
স্টার্ক-স্টোকসের বিধ্বংসী বোলিংয়ের অ্যাশেজের প্রথম দিন ১৯ উইকেট পতন
সাকিবের রেকর্ড স্পর্শ করলেন তাইজুল
ঝিনাইদহে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কৃষকের মৃত্যু
ঝিনাইদহে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে এক কিশোর নিহত
কুমিল্লা সীমান্তে ভারতীয় বিভিন্ন মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি 
শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ আপসহীন নেতা ছিলেন : ডা. শফিকুর রহমান
লন্ডনে এসএমই মেলায় প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশি নারী উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবন
জাল ভিসা ও বিমান টিকিট প্রতারণা চক্রের প্রধান গ্রেফতার
চবিতে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট : উচ্চশিক্ষার নতুন দিগন্ত
কোপ৩০ খসড়ায় জীবাশ্ম জ্বালানি বাদ; আপত্তি ৩০টির বেশি দেশের
১০