তিস্তার পানি কমলেও স্বস্তিতে নেই জনপদ

বাসস
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩৫ আপডেট: : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪৩
ছবি : বাসস

লালমনিরহাট, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টির প্রভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোতে ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো পানি বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী হাজারো পরিবার।

তিস্তা নদীর পানি ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে। আজ সকাল ৯টায় হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৭ মিটার, যা বিপদসীমা (৫২ দশমিক ১৫ মিটার) থেকে ৮ সেন্টিমিটার নিচে।

তবে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টায় নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

এতে লালমনিরহাটের তীরবর্তী হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।

হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পাটগ্রামের দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান, কালীগঞ্জের শৈইলমারী ও নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা ও গোবর্ধন এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়ন।

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক এলাকা এখনো জলমগ্ন। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, বসতঘর, ফসলি জমি ও পুকুর। বিকল্প যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে নৌকা ও বাঁশের ভেলা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। আমন ধানসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, “হঠাৎ তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় আমাদের চারপাশ ডুবে গেছে। কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। রাস্তঘাটও পানির নিচে।”

আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের ইয়াকুব আলী জানান, “রাতে পানি বাড়তে থাকায় রান্না করা সম্ভব হয়নি। 

সকাল থেকে না খেয়েই আছি। এখনো কেউ খোঁজ নেয়নি।”

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ভারতের উজানে কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পানির গতি তীব্র হয় এবং রাতেই তা বিপদসীমা অতিক্রম করে। তবে বুধবার সকাল থেকে পানি কমছে।

পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুণীল কুমার জানান, “তিস্তার পানি রাতের দিকে বিপদসীমার ওপরে উঠে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। তবে বুধবার সকাল থেকে পানি দ্রুত হারে কমতে শুরু করেছে।”

জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, “পানিবন্দি মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে, খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে তা বিতরণ শুরু করা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
চলনবিলে পানি কমায় সরিষা চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকেরা
বন্যপ্রাণী রক্ষায় প্রতিটি জেলায় স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে: পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা
মালয়েশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে ট্রাম্পের এশিয়া সফর শুরু
রাজশাহীতে হেরোইন উদ্ধার, নারীসহ আটক ২
লঘুচাপ ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণীঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের গোপন অভিযানের বিরুদ্ধে উপকূল রক্ষায় অঙ্গীকার ভেনিজুয়েলার
নারায়ণগঞ্জে ডাইং কারখানায় বিস্ফোরণে দগ্ধ ৬
বদরগঞ্জে গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি
নারায়ণগঞ্জে নিরাপদ ব্যবসা পরিবেশের দাবি 
২২ দিন পর লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় মাছ ধরা শুরু, দাম কম
১০