জীতেন বড়ুয়া
খাগড়াছড়ি, ১১ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): জেলার মহালছড়িতে চেঙ্গী নদীর ভাঙনে স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ বাবুপাড়া গ্রামের গাঙকুল সড়কটি ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে। বর্ষার শুরু থেকেই প্রবল স্রোত ও বৃষ্টিতে নদী ভাঙন শুরু হলে গাঙকুল সড়কটি এলাকাবাসীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহাদাৎ হোসেন বাসসকে বলেন, বর্তমানে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান না থাকায় সড়কটি সংস্কারে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে এলাকার একমাত্র সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এ সড়কে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে গ্রামবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহালছড়ি সদরের বাবুপাড়া গ্রামের গাঙকুল শ্মশানে যাওয়ার রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। চেঙ্গী নদীর তীরবর্তী অংশে মাটি ধসে সড়কের বড় একটি অংশ বিলীন হয়ে গেছে। এই বর্ষায় যে কোনো সময় সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
ভাঙনের ফলে জনসাধারণ, বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক ও স্থানীয় শ্রমজীবীদের চলাচল দুরূহ হয়ে উঠেছে। নদী ভাঙনে গ্রামের বাবুপাড়ায় গাঙকুল শ্মশানে যাওয়ারও একমাত্র সড়ক এটি। তাই এলাকার কেউ মারা গেলে তার শেষকৃত্য করতে শ্মশানে যাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ভাঙনের বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় বৃষ্টি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থী, কৃষক ও স্থানীয় শ্রমজীবীদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বাবুপাড়া গাঙকুল সড়ক। এ সড়কটি ভেঙে গেলে দুই গ্রামের প্রায় ১০ হাজার লোকের দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন চাকমা বাসসকে বলেন, ‘এখান দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ যাতায়াত করে। রাস্তাটা একেবারে ধসে যাচ্ছে। দ্রুত কিছু না করলে পুরো রাস্তাটাই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের কাছে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বাবুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসিত বরণ চাকমা জানান, স্থানীয় শ্মশান ঘাটে যাওয়ারও একমাত্র রাস্তা এটি। নদীভাঙনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সড়কটি। এই রাস্তা দ্রুত নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করা না হলে চাকমা সম্প্রদায়ের একমাত্র শ্মশানে শবদেহ নিয়ে যাওয়ার উপায় থাকবে না। তিনি রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হানকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হলে তিনি টিআর কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তাটি দ্রুত নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।