রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি: বিশেষজ্ঞদের মত

বাসস
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১৮:২৯
ছবি: বাসস

রাজশাহী, ১১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রচলিত সেচ প্রক্রিয়ার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অঞ্চলের টেকসই পানি সম্পদ নিশ্চিত করতে ভূ-পৃষ্ঠের পানি সংরক্ষণ, কার্যকর সরবরাহ, চাহিদা ব্যবস্থাপনা এবং জনসম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ প্রয়োজন।

আজ সোমবার রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ এবং পানি বিধিমালা, ২০১৮’ শীর্ষক এক এডভোকেসি কর্মশালায় গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

ওয়াটার রিসোর্স প্ল্যানিং অর্গানাইজেশন (ওয়ারপো) ও উপজেলা সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

ওয়ারপো’র মহাপরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এতে  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ সভাপতিত্ব করেন।

ওয়ারপোর পরিচালক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে পানি আইন ও বিধিমালার সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, উপজেলা বিএমডিএ প্রকৌশলী জামিলুর রহমান এবং হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি মাহবুব সিদ্দিকীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

কর্মশালায় বলা হয়, সেচের জন্য অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন একটি বড় সমস্যা, যা পানির স্তর হ্রাস করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাত পানির সংকটকে তীব্র করছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, অদক্ষ সেচ পদ্ধতিসহ অপর্যাপ্ত পানি ব্যবস্থাপনা পানি অপচয়ে ভূমিকা রাখছে। কৃষি ও অন্যান্য কাজে জলাভূমি ও জলাশয় রূপান্তরের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের পানির সংরক্ষণ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।এ ছাড়া, বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও একটি সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার অনুপস্থিতি কার্যকর পানি ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

তিনি বলেন, পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে একটি সমন্বিত পদ্ধতি গ্রহণ প্রয়োজন। ভূ-পৃষ্ঠের পানির সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও পানি সেচকে উৎসাহিত করতে খাল, পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ের পুনঃখনন এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

ভূগর্ভস্থ পানির ভাণ্ডার পুনরায় পূরণের জন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও কৃত্রিম পুনঃপূরণ প্রযুক্তি বাস্তবায়নের পাশাপাশি ড্রিপ সেচের মতো পানি-সাশ্রয়ী সেচ ব্যবস্থা এবং পানি-সাশ্রয়ী কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ সমস্যার কার্যকর সমাধান হতে পারে।

মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, অংশগ্রহণমূলক গ্রামীণ মূল্যায়ন (পিআরএ) ও অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে যুক্ত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে পানি সংরক্ষণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা (আইডব্লিউআরএম) কমিটিগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতায়নের সময় এসেছে।

অনুষ্ঠানে পানি সম্পদের পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পাঁচ শ্রেণির করদাতাদের জন্য অনলাইন রিটার্ন দাখিল শিথিল করেছে এনবিআর
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ছিল সবার যৌথ লড়াই: বরকত উল্লাহ বুলু
জ্বালানি উৎপাদনে চসিক মেয়রের সঙ্গে জাপান প্রতিনিধি দলের বৈঠক
পাকিস্তানে খাল সংস্কারকালে ভূমিধসে নিহত ৭
সাতক্ষীরায় মাদক, সন্ত্রাস ও চোরাচালান প্রতিরোধে সমাবেশ  
বান্দরবানে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা 
চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, ভোট ১ নভেম্বর
রাজধানীতে হজ ও ওমরা মেলার আয়োজন করছে হাব
আগামী জাতীয় নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পাবলিক টয়লেট ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ডিএনসিসি ও ওয়াটারএইড-এর মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষর
১০