ময়মনসিংহ, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শুভ মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে ময়মনসিংহে আজ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
রোববার ভোরে নগরীর ঐতিহ্যবাহী দুর্গাবাড়ি নাট মন্দিরে আর্যধর্ম জ্ঞানপ্রদায়িনী সভার আয়োজনে চণ্ডীপাঠ, ঢাক-শঙ্খ ধ্বনি ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা করেন ভক্তরা।
ভোর ৬টা ২ মিনিটে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী আবাহনের পর্ব। সমবেত সঙ্গীত, মাতৃ বন্দনা ও নৃত্যনাট্যে মহিষাসুর বধের কাহিনী তুলে ধরা হয়, যা দেখে উপস্থিত শত শত ভক্ত আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন। মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে সূচিত হয় দেবী পক্ষ এবং দেবীর চক্ষুদানের প্রস্তুতি শুরু হয়।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় পিতৃপক্ষ, আর দেবীপক্ষের শুরু হওয়ায় দিনটি তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল উৎসব। তবে রোববার মহালয়ার দিন থেকেই শহরে পূজার আগমনধ্বনি শোনা যাচ্ছে। নগরী জুড়ে ভক্তদের মাঝে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে চলছে প্রস্তুতি, আলোকসজ্জা আর প্রতিমা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে স্বাগতম জানিয়ে দৈনিক আজকের বাংলাদেশর নির্বাহী সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ পাল বলেন, মহালয়া মানেই দেবীর কাছে প্রার্থনা, যেন তিনি মর্ত্যে আগমন করেন শান্তি, শক্তি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে।
দেবী দুর্গার আবাহনে তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনায় নিবিষ্ট হন, সকল অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটুক, বিজয় হোক শুভের।
দুর্গাবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত মহালয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- দুর্গাবাড়ি আর্যধর্ম জ্ঞানপ্রদায়িনী সভার সভাপতি প্রফেসর বিমল কান্তি দে, মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার দাস চন্দন এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পিযুষ কান্তি সরকার। এছাড়াও হিন্দু ধর্মাবলম্বী শত শত ভক্ত ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রে জানা যায়, এ বছর ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮৮টি ও পুরো জেলায় মোট ৭৮১টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা।