সুনামগঞ্জে জমকালো আয়োজনে আজ মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজা শুরু

বাসস
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:১৩

/মো. আমিনুল হক/ 

সুনামগঞ্জ, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যুহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকারেরা দুর্গার নামের অন্য একটি অর্থ করেছেন। যা দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

পুরাণে আছে, অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হয়েছিলেন। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। অসুর শক্তির বিনাশে অনুভূত হলো এক মহাশক্তির আবির্ভাব। দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে তিনি রক্ষা করেন ত্রিভুবন। এ কারণে দুর্গা কখনো দুর্গতিনাশিনী।

এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হবে গজ বা হাতিতে। শাস্ত্র মতে যা দেবীর উৎকৃষ্টতম বাহন। দেবীর আগমন বা গমন হাতিতে হলে মর্ত্যলোক ভরে ওঠে সুখ শান্তি আর সমৃদ্ধিতে। পূর্ণ হয় ভক্তদের মনোবাঞ্ছা। পরিশ্রমের সুফল পায় মর্তলোকের অধিবাসীরা। এছাড়াও বিজয়া দশমীতে দেবীর গমন হবে দোলা বা পালকিতে। যার ফল হচ্ছে মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের সুনামগঞ্জ পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক বিধান চন্দ্র দাস পূজা নিয়ে এসব কথা বলেন।

৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা আজ রোববার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়েছে প্রতিটি পূজামণ্ডপ। ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫দিনব্যাপী দুর্গোৎসব। 

প্রত্যেক বছর ঢাক, ঢোল, শঙ্খ বাজিয়ে নেচে গেয়ে বরণ করা হয় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে। এবারও দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত সুনামগঞ্জ জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দুর্গোৎসব উপলক্ষে পৌর শহরের প্রতিটি মণ্ডপ সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। প্রতিটি মণ্ডপেই প্রতিমা স্থাপন ও সাজসজ্জায় ভরপুর। দুর্গোৎসবকে ঘিরে বিরাজ করছে জেলা, উপজেলায় উৎসবের আমেজ।

এদিকে গতকাল শনিবার সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় বোধন হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমেই দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হয়। সে অনুযায়ী মণ্ডপে, মন্দিরে পঞ্চমীতে বন্দনাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। বোধন দুর্গাপূজার অন্যতম আচার। বোধন শব্দের অর্থ জাগরণ বা চৈতন্যপ্রাপ্ত। পূজা শুরুর আগে সন্ধ্যায় বেলশাখায় দেবীর বোধন দুর্গাপূজার একটি অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। শরৎকালের দুর্গাপূজায় এই বোধন করার বিধান রয়েছে। বিভিন্ন পুরাণ অনুসারে ভগবান রামচন্দ্র শরৎকালে রাক্ষসরাজ রাবণকে বধের উদ্দেশ্যে দুর্গাপূজা করেন। তিনি অকালে এই বোধন করেন বলেই এটি অকালবোধন নামেও খ্যাত। তবে বসন্তকালে চৈত্র মাসে যে দুর্গাপূজা তথা বাসন্তীপূজা হয়, তাতে বোধন করার প্রয়োজন হয় না।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সোমপাড়া, কালীবাড়ি, বাঁধনপাড়া, ষোলঘর, নতুনপাড়া, নবীনগরসহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, দর্শনার্থীদের নজর কাড়তে প্রত্যেক এলাকার প্রবেশপথ থেকে পূজামণ্ডপ পর্যন্ত পুরো সড়কজুড়ে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। প্রতিটি মণ্ডপের সামনেই তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় গেট। মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলে। পুরো শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করল কানাডা
ড্যাপ সংশোধন ও ঢাকা মহানগর ভবন নির্মাণ বিধিমালা-২০২৫ খসড়ার নীতিগত অনুমোদন
জুলাই সনদ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুণগত পরিবর্তনের সূচনা: মান্না
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙ্গিনায় ফিরছে আফগানিস্তান
দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয়বার হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য পাকিস্তানের
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত
ব্রেস্ট ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি : চসিক মেয়র
চাঁদপুরে মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল ও ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রির দায়ে জরিমানা
শেষ দিন হ্যাটট্রিক করে এমএলএস গোল্ডেন বুট জয় করলেন মেসি
পিরোজপুরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা, সিলগালা
১০