খেলাপি ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা আদায়ে কাজ করছে টাস্কফোর্স: রূপালী ব্যাংকের এমডি

বাসস
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৩০
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

মোশতাক আহমদ

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা আদায়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স কাজ করছে। রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, টাস্কফোর্সের সহায়তায় এরই মধ্যে ১ হাজার ৭শ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে।

রোববার মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস’কে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। গত ১৬ বছরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেওয়া এই বিপুল পরিমাণ ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে নীরবে বসে নেই। বছরের শুরু থেকে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।

প্রধান কার্যালয়ে দু’টি ভাগে দু’টি গ্রুপ এমডি ও ডিএমডিদের নেতৃত্বে কাজ করছে। ডিএমডির নেতৃত্বে বিভিন্ন এরিয়া ভাগ করা হয়েছে। এছাড়া জিএমদের নেতৃত্বে বড় খেলাপি ঋণ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। শাখা পর্যায়ে মনিটরিং করার জন্য ডিজিএমদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২৫ সালকে খেলাপি ঋণ আদায় বর্ষ ঘোষণা করেছি। বর্ষব্যাপী বিভিন্ন দল কাজ করছে। ফেব্রুয়ারি ৩ তারিখে প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে পদবী অনুযায়ী শ্রেণিকৃত ঋণ ও কেন্দ্রীয় ঋণ আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টার্গেট দেওয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে তারা কাজ করছে।’

এছাড়াও মাঠ পর্যায়ে শাখা ও জোন অফিসগুলোর মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান কার্যালয় থেকে ডিএমডিদের নেতৃত্বে মাঠ পরিদর্শন করা হচ্ছে।

কাজী ওয়াহিদুল ইসলাম আরও জানান, আদায়ের প্রধান ফোকাস হচ্ছে শ্রেণিকৃত ঋণ। ২৫ সেপ্টেম্বরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নগদ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ১১শ’ কোটি টাকা নগদ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে এবং নগদে ৬৫০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। সারাদেশে ৫৮৬টি শাখার মাধ্যমে গ্রাহককে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ঋণ দেওয়া বন্ধ না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভাল গ্রাহক নির্বাচন করে সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট চাই। ঋণ নবায়নের সময় গ্রাহক যদি নবায়ন না করে বা সুদ পরিশোধ না করে, আমরা পুনরায় যাচাই করে প্রক্রিয়া করি। বড় ঋণের ক্ষেত্রে পলাতক থাকলে ট্রানজেকশন অনুযায়ী মূল্যায়ন করি। প্রপার ট্রানজেকশন থাকলে নিয়ম অনুযায়ী ঋণ নবায়ন করা হবে।’

এছাড়া ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। সিএমএস খাতের ওপর বিশেষভাবে ফোকাস করা হচ্ছে। বড় ঋণগুলো শাখা থেকে হেড অফিসে প্রস্তাব পাঠিয়ে বোর্ড অনুমোদনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘শাখা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। গত বছরের তালিকার ৪৪টি শাখা পুনঃপ্রেরণ করতে হয়েছে। আমি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এমডি পদে যোগদান করেছি। আমাদের লক্ষ্য প্রযুক্তি নির্ভর সেবা বৃদ্ধি করা এবং রূপালী ব্যাংককে প্রযুক্তিতে শীর্ষে আনা।

তিনি আরও জানান, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের লাইসেন্সও উদ্বোধন করা হয়েছে। আগের ‘রূপালী শিউর ক্যাশ’ এখন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ‘রূপালী ক্যাশ’ নামে পরিচালিত হচ্ছে। ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড সতর্কতার সঙ্গে ব্যাংককে এগিয়ে নিচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজপথ আর উত্তপ্ত হতে দেব না : সালাহউদ্দিন আহমেদ
মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে খেলাধুলা : হাসনাত আব্দুল্লাহ
৭ নভেম্বর শুরু হওয়া দলকে সংস্কার শেখাতে হবে না : মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল
রাজশাহীতে আইডিইবি’র ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
আল্লামা ইকবালের ১৪৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাবি ও প্রেসক্লাবে সেমিনার
সাংবাদিকদের দলবাজি ত্যাগ করে পেশাদারিত্ব সমুন্নত রাখতে হবে : এম আবদুল্লাহ
এমন রাষ্ট্র গড়বো যেখানে ক্ষমতা মানে ভালোবাসা, দায়িত্ব মানে সেবা : শারমীন এস মুরশিদ
২৩ জন নির্বাচন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে ইসি 
এ দেশে সকল ধর্মে ও গোত্রের মানুষের সমান মর্যাদা থাকবে : মির্জা ফখরুল 
নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের পদ স্থগিত
১০