রাঙামাটি, ১১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, সরকার সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল এবং ধর্মীয় উৎসবগুলো নির্বিঘ্নে পালনের জন্য সব সময় সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
আজ শনিবার বিকেলে জেলা শহরের মোনঘর রাঙ্গাপানি মিলন বিহার প্রাঙ্গণে আয়োজিত কঠিন চীবর দান উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি আরও বলেন, এই উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, এটি পাহাড় ও সমতলের মধ্যে সম্প্রীতির সেতুবন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। এটি শান্তি, সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রের বার্তা বয়ে আনবে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম. খালিদ হোসেন।
সুপ্রদীপ চাকমা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি। শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকলের দায়িত্বশীল সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিভ্রান্তিকর তথ্য ও বিশৃঙ্খলা থেকে সতর্ক থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা, যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা আরও জোরালো হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা জরুরি। এটিকে কোনোভাবে ফাটল ধরানো যাবে না।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য ঢাকার উত্তরায় একটি শ্মশান নির্মাণ করা হয়েছে এবং পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের বৌদ্ধ বিহার ও কল্যাণ ট্রাস্ট ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ২১ কাঠা জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে সহায়তার অংশ হিসেবে ২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, জাতীয় কঠিন চীবর দান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রনজ্যোতি চাকমা, সংগীত শিল্পী রনজিত দেওয়ানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ।
দিনব্যাপী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এই ঐতিহাসিক আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
উৎসবে সারা দেশ থেকে তিন শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু অংশগ্রহণ করেন। কক্সবাজার, টেকনাফ, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, কুমিল্লা, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রামসহ সমতলের বিভিন্ন ভিক্ষুসংঘ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৬টি ভিক্ষুসংঘকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
উৎসবের শুরুতে আকাশ প্রদীপ দানোৎসর্গ, প্রদীপ প্রজ্বলন, পঞ্চশীল প্রার্থনা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় করণীয় মৈত্রী সূত্র পাঠ অনুষ্ঠিত হয়।