তাড়াশে খেজুর রস সংগ্রহে প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা

বাসস
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:২৯
খেজুর রস সংগ্রহে গাছিদের প্রস্তুতি। ছবি : বাসস

হারুন অর রশিদ খান হাসান

সিরাজগঞ্জ, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : প্রকৃতিতে শীতের আমেজ এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। এরই মধ্যে খেজুর রস সংগ্রহে গাছিদের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এখন চলছে গাছ ঝোঁড়া, পরিষ্কার ও নল লাগানোর কাজ। কয়দিন পর যখন শীত বাড়তে থাকবে, তখন শুরু হবে খেজুরের গাছের বুক চিরে সুস্বাধু রস সংগ্রহ। তাই গাছিরা এখন খেজুর গাছগুলো প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

আর এ কর্মযজ্ঞ চলছে চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের ঝোঁপ-ঝাড়, রাস্তার ধার ও বসত বাড়ির আঙ্গিনায় বেড়ে ওঠা খেজুর গাছগুলোতে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কার্যালয় জানিয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়, বসতবাড়ি, পুকুর পাড়ে ও পরিত্যক্ত ভিটে-মাটিতে অযন্ত অবহেলায় বেড়ে ওঠা ছোট বড় প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ৫০০ টন রস সংগ্রহ হয়ে থাকে। ওই রস থেকে তৈরি হয় প্রায় ১৮ থেকে ২০ টন খেজুর গুড়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খেজুর গাছগুলোর ডাল পালা পরিষ্কার ও নল (চুঙ্গি) লাগানোর কাজ করছেন গাছিরা। স্থানীয় গাছিদের পাশাপাশি রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট, নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে আসা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি গাছির দল এসব কাজ করছেন। 

ইতোমধ্যে গাছির দল উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ঘাঁটি স্থাপন করেছেন। এছাড়া তারা রস থেকে গুড় তৈরির জন্য জ্বালালি হিসেবে সংগ্রহ করছেন নাড়া (খড়) ও গার্মেন্টের বর্জ্য ঝুট। 

রাজশাহীর চারঘাট থেকে আসা গাছি মো. সবুজ হোসেন (৩৪) বলেন, এখন খেজুরের গাছগুলো রসের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির কাজ শুরু করা হবে।  

তাড়াশ উপজেলার ভাদাশ গ্রামের গাছি আব্দুল মতিন বলেন, শীতের শুরুতেই এলাকার মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি থেকে সাড়ে ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে গাছগুলো লিজ নেওয়া হয়েছে। এখন ডাল পালা ঝোঁড়া ও পরিষ্কার করা হচ্ছে যাতে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি করা যায়।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তুলশীপুর (হরিপুর) গ্রামের গাছি মো. পলাশ হোসেন জানান, এ বছর তাড়াশ উপজেলায় রাজশাহী অঞ্চল থেকে ৩০ থেকে ৩৫ টি গাছির দল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ফাল্গুন মাস পর্যন্ত খেজুর গুড় তৈরি সম্ভব হবে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা জানান, শীত মৌসুমে খেজুরের রস থেকে তৈরিকৃত গুড় সবার কাছেই বেশ সমাদৃত। খেজুর রস থেকে কৃষকের বাড়তি আয় হয়। সে জন্য কৃষকদের বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়ে ও ভিটে-মাটিতে থাকা খেজুর গাছের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ন্যাশনাল টাইম সেন্টারে সাইবার হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অভিযোগ চীনের 
গাজা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে পরস্পরকে দোষারোপ ইসরাইল ও হামাসের
দ্বিতীয়বারের মতো ‘মালাক্কা আন্তর্জাতিক হালাল ফেস্টিভাল ২০২৫’-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
তেল চুরির অভিযোগে যমুনা তেল কোম্পানির ফতুল্লা ডিপোতে দুদকের অভিযান
বাংলাদেশ-কুয়েতের প্রথম রাজনৈতিক পরামর্শ, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার
জাপানে সাকুরা সায়েন্স এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন খুবির ৭ শিক্ষার্থী
সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা
ঢাবিতে বিনামূল্যে ফার্স্ট এইড প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আয়োজন করছে ডাকসু
১৩তম জিম্মির মরদেহ হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছে হামাস
নতুন বাড়িভাড়া গ্রহণ করে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবেন : প্রত্যাশা শিক্ষা উপদেষ্টার
১০