
\ আবুল কালাম আজাদ \
বগুড়া, ৮ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : শীতকাল মানেই যেন ঘন কুয়াশা আর নানান রঙের সবজির বাহার। প্রকৃতিতে এখনও শীতের আমেজ জমে ওঠেনি। কিন্তু স্থানীয় বাজারগুলো সেজেছে শীতকালীন সবজিতে।
উত্তরবঙ্গের সবজির সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বগুড়ার মহাস্থান হাট। বাজারটি শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে। শনিবার সকালেও এ বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ ভালো দেখা গেছে। ভোর থেকেই বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, আশপাশের গ্রাম ও ইউনিয়নের কৃষকরা সকাল থেকেই ট্রলি, ভ্যান, অটো বা ভটভটিতে করে সবজি নিয়ে হাটে আসছেন কৃষকরা। পরে সেগুলো সাজিয়ে রাখা হচ্ছে নির্ধারিত স্থানে। সবজি কিনতে সেখানে ভিড় করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
এ সময় কৃষকরা জানান, শীতের শুরুতে সবজির চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রি করে আয় ভালো হয়েছে। এর মধ্যে একজন কৃষক বলেন, আজকের (শনিবার) তুলনায় ফুলকপির দাম কিছুদিন আগে অনেক ভালো ছিল।
বাজার থেকে সংগ্রহকৃত সবজি পরে পাইকাররা ঢাকায় সিংহ ভাগসহ চট্টগ্রাম, সিলেট এবং পাশের জেলার অন্যান্য বাজারে নিয়ে যায়। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় সকাল থেকেই চোখে পড়ার মতো।
ক্রেতারা জানান, তারা মূলত টাটকা সবজি ও সঠিক দাম খুঁজেই বাজারে এসেছেন। তারা বলেন, শীতকালীন মৌসুমে দাম ও মানের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকায় এ বাজার থেকে সবজি কেনা লাভজনক। বাজার থেকে ফুলকপি ও মুলা বেশি কেনা হচ্ছে। শীতের শুরুতে সবজির চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি হলেও ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ায় দাম আরও কমবে।
বর্তমান বাজার মূল্যের তথ্য অনুযায়ী, মহাস্থান হাটে শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা স্থিতিশীল। প্রতিকেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা দরে, শিম ৭০-৭৫ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ২৮-৩৫ টাকা প্রতি পিস, মুলা ১০-১৫ টাকা কেজি এবং বড়বটি ৩০ টাকা কেজি। বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা টাটকা সবজি কিনতে পেরে সন্তষ্ট।
বাঁধাকপির পাইকারি বিক্রেতা আসাদুল বলেন, প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে আসবে। তবে এখন বিক্রি ভালো, লাভও হচ্ছে।
আরেক পাইকারি বিক্রেতা ফজলু বলেন, যার ফলন হয়েছে, সে ভালো দাম পাচ্ছে। আকার অনুযায়ী দাম নির্ধারিত হচ্ছে। শীতের শুরু বলে এখনো দাম ঠিকই আছে।
মুলা চাষি রাজ্জাক বলেন, মুলা সারাবছরই চাষ হয়, তবে শীতকালে উৎপাদন বেশি হয়। শীতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় দাম কিছুটা কম হলেও চাষিরা লাভে আছেন।
কাঁচামাল আড়ৎ ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, শীতের শুরুতে বাজার জমে উঠেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন সবজি আসছে বাজারে। সরবরাহ ভালো থাকলে দাম স্থিতিশীল থাকে। এতে কৃষক ও ক্রেতা—দুজনই উপকৃত হন।