
ঢাকা, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস): আঞ্চলিক শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও চীন তাদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার মালদ্বীপে নিযুক্ত দুই দেশের রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকটি অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই কূটনীতিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন। তারা আঞ্চলিক শান্তি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়ন জোরদারের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। মালদ্বীপে বাংলাদেশ, চীন ও মালদ্বীপের মধ্যকার ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার কাঠামো আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও উভয়ে একমত হন।
আলোচনায় মালদ্বীপে চলমান চীনা বিনিয়োগ প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। চায়না-মালদ্বীপ ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ, ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন, আঞ্চলিক বিমানবন্দর নির্মাণ ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) সম্প্রসারণ প্রকল্পে বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরিশ্রম, দক্ষতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেন উভয় রাষ্ট্রদূত।
চীনের রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়া বলেন, ‘মালদ্বীপে চীনের উন্নয়ন সহযোগিতা সবসময় ‘উইন-উইন পার্টনারশিপ’-এর নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা।’ তিনি মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদান ও শৃঙ্খলার প্রশংসা করে বলেন, চীনা দূতাবাস তাদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবসময় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম মালদ্বীপের উন্নয়ন সহযোগিতায় চীনের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি ও সক্ষম দেশ হিসেবে আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি স্বাভাবিক অংশীদার। অবকাঠামো, শিক্ষা, নীল অর্থনীতি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে যৌথভাবে কাজের সম্ভাবনা অনেক।’
উভয় কূটনীতিক মালদ্বীপের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সুযোগ নিয়েও মতবিনিময় করেন। তারা বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, তিন দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত কং জিয়ানহুয়া বলেন, ‘মালদ্বীপে অবস্থিত চীনা দূতাবাস সবসময় বাংলাদেশের জন্য সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত রাখবে।’ এ সময় হাইকমিশনার ড. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশও প্রস্তুত রয়েছে এমন যেকোনো সহযোগিতায় অংশ নিতে, যেখানে তিন দেশের জনগণ সম্মিলিতভাবে উপকৃত হতে পারে।’
বৈঠকে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক বন্ধন পুনরুজ্জীবনের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। দুই কূটনীতিকই মত দেন, পারস্পরিক আস্থা ও ঐতিহাসিক সংযোগের এই ধারা বজায় থাকলে আঞ্চলিক শান্তি, সংলাপ ও টেকসই উন্নয়ন আরও শক্তিশালী হবে।