বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির আর নেই

বাসস
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২০:০৭
সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু, শতবর্ষী ত্রয়োদশ সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির। ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু, শতবর্ষী ত্রয়োদশ সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

কিংবদন্তি বৌদ্ধ মনীষা, সমাজ সংস্কারক, বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, একুশে পদকপ্রাপ্ত, বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ছিলেন ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো। তার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে আসে। 

রাউজান উপজেলার উত্তর গুজরা (ডোমখালী) গ্রামে ১৯২৫ সালের ১৮ নভেম্বর বাবা প্রেম লাল বডুয়া ও মা মেনোকা রানী বড়ুয়ার ঘর আলোকিত করে জন্ম নিয়েছিলেন লোকনাথ বড়ুয়া। সেদিনের লোকনাথ কিশোর বয়সে মাকে হারিয়ে তার মামা পশ্চিম বিনাজুরী গ্রামের কীর্তিমান সংঘ মনীষা ভদন্ত সারানন্দ মহাস্থবির সার্বিক সহযোগিতায় ১৯৪৪ সালে গৌরবদীপ্ত সাংঘিক ব্যক্তিত্ব, উপ-সংঘরাজ ভদন্ত গুণালঙ্কার মহাস্থবিরের কাছে হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে শ্রামণ্য ধর্মে দীক্ষা নেন। 

পাঁচ বছর পর শ্রামণ্য ধর্মের ইতি টেনে ১৯৪৯ সালে গুরু ভদন্ত গুণালঙ্কার মহাস্থবিরের উপাধ্যায়ত্বে দুর্লভ উপসম্পদা লাভ করেন। উত্তর গুজরা ডোমখালী গ্রামের সেদিনের সেই লোকনাথ আজ বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু, বৌদ্ধ বিশ্বের বর্ষীয়ান কিংবদন্তি সাংঘিক ব্যক্তিত্ব, একুশে পদকপ্রাপ্ত সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো। তার ৮০ বছরের প্রব্রজিত জীবন যেন এক বর্ণাঢ্য ইতিহাস। সুদীর্ঘকাল বৌদ্ধ সমাজকে  তিনি তার মেধা, মনন, প্রজ্ঞা, শ্রম, আত্মত্যাগ, শীল, সমাধি, প্রজ্ঞার আলোয় উদ্ভাসিত করেছিলেন। 

ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো ১৯৮১ সালে থাইল্যান্ড থেকে শাসনশোভন জ্ঞানভানক উপাধি লাভ করেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক ‘বিনয়াচার্য’ উপাধি লাভ করেন। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক উপ সংঘরাজ স্বীকৃতি লাভ করেন। ২০০৬ সালে তৎকালীন মিয়ানমার সরকার কর্তৃক মহাসম্মজ্যোতিকাধ্বজ উপাধি লাভ করেন। ২০০৭ সালে থাইল্যান্ডের মহাচুল্লালংকার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান সূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৮ সালে বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ থেকে স্বর্ণপদক ও উপাধি লাভ করেন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি কর্তৃক পুণ্যাচার-উ, গুণমেজু স্বর্ণপদক লাভ। থাইল্যান্ড কর্তৃক আউট স্ট্যান্ডিং অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ২০১৪ সালে। ২০২০ সালের ২০ মে সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সর্বোচ্চ সম্মাননা মহামান্য ‘সংঘরাজ’ নির্বাচিত হন।

২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘একুশে পদকে’ ভূষিত হন। ২০২৩ সালে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক ‘অগ্রমহাণ্ডিত’ উপাধি লাভ করেন। ২০২৪ সালে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব বাংলাদেশি বুড্ডিস্ট কর্তৃক সম্মাননা ও সংবর্ধনা লাভ করেন। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১,৯২৩
শিল্প ও শিক্ষার যৌথ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা করলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
সিলেটের জনজীবনে প্রভাব ফেলতে পারেনি লক ডাউন
দেশে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল
৫শ উইকেটের ক্লাবে তাইজুল
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু আগামীকাল 
পুলিশ কর্মকর্তাদের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান 
নির্বাচিত সংসদ দেশের অনিষ্পন্ন সমস্যাগুলোর সমাধান করবে : ফখরুল
সিলেটে ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার চোরাচালানি পণ্য আটক
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি: আইএমএফ
১০