লক্ষ্মীপুরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ

বাসস
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৬ আপডেট: : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:১১
ছবি : বাসস

আব্বাছ হোসেন

লক্ষ্মীপুর, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস) : জেলার ডাব ও নারিকেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই অঞ্চলের সুস্বাদু ডাব এখন লক্ষ্মীপুরের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। ডাবের গুণগত মান, উচ্চ ফলনশীলতা ও চাহিদা বেশি থাকায়  এই এলাকায় নারকেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের এই উদ্যোগে সফল হয়েছে চাষিরাও। চলতি বছরে ৫০ কোটি টাকার ডাব বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে নারিকেলের আবাদ হচ্ছে। সরকারি হিসেবে এ জেলায় বছরে প্রায় ২৬ হাজার ৯শ ৬০ মেট্রিক টন নারিকেল উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৪শ মে.টন ডাব উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বেসরকারি হিসেবে উৎপাদনের পরিমাণ আরো বেশি। 

কৃষি বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুরের ডাবের গুণগত মান ভালো হওয়ায় সারা দেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা।  এখানকার চাষিরা বহু বছর ধরেই গাছের ডাব বিক্রি করছে পাইকারদের কাছে। প্রতিটি ডাব খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। সেই ডাব ৩ হাত ঘুরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে। 

ছবি : বাসস

জানা যায়, চাষির কাছ থেকে মাত্র ৬০-৭০ টাকায় কেনা ডাব খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। আকার ভেদে কখনো কখনো একটি ডাবের দাম আরো বেশি বেচাকেনা হচ্ছে। তবে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, নারকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় ডাব ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাষিদের কাছ থেকে প্রকারভেদে প্রতিটি ডাব ৭০-৮০ টাকা দরে কিনলেও গাছ থেকে সংগ্রহ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মোকাম পর্যন্ত আনতে ঘাটে ঘাটে টাকা খরচ হয়। একজন গাছি (যারা গাছে উঠে ডাব কেটে নিচে নামায়) প্রতিবার গাছে ওঠার জন্য ১০০ টাকা নেয়। তা ছাড়া ভ্যান কিংবা ট্রাকে করে সেই ডাব দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেও অনেক খরচ হয়। সব মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে ২০ কিংবা ৩০ টাকা লাভ ধরে মোকামে বিক্রি করেন তারা। তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের ডাব সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়েই এর চাহিদা রয়েছে।

সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার কৃষক তোফায়েল আহমদ বাসসকে বলেন, ডাব চাষের অনুকূল পরিবেশ, পোকার উপদ্রব কম এবং গাছগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে প্রতি বছরই ডাবের ফলন ভালো হয় এবং ভালো দামে ডাব বিক্রি করা যায়। এবছর ইতোমধ্যেই তিনি ৫০ হাজার টাকার ডাব বিক্রি করেছেন বলে জানান। 

ছবি : বাসস

একই এলাকার কৃষক ইউসুফ হোসেন ও নুরুজ্জামান জানান, কম পুজি ও কম পরিচর্যায় নারকেল চাষ করা যায় বলে এলাকার কৃষকরা অনেকেই এখন নারকেল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের নারিকেলের চেয়ে ডাবের চাহিদা বেশি। এই কারণে ডাব অবস্থায়ই বেশিরভাগ বিক্রি করে দেওয়া হয়। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো.জহির উদ্দিন বলেন, এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারিকেল ও ডাব সরবরাহ করা হয়। এছাড়া দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হয়। নারিকেলের চেয়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা ডাব বিক্রি করে দিচ্ছে। এবার শুধু ডাব বিক্রি করেই প্রায়  ৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।

তিনি বলেন, ডাবের পানি মানবদেহে নানা প্রয়োজনীয় উপাদান জোগান দিতে সহায়তা করে। তাই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় চিকিৎসকরা রোগীদের ডাব খাওয়ার পরামর্শ  দিয়ে থাকেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রতিটি ব্যক্তি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করেন। এই সুযোগে চাষিরাও ডাবের ভালো দাম পাচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধীদের ভয় দেখানো জন্য হাদিকে গুলি করা হয়েছে : সারজিস আলম
কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ যোগে ঢাকা-চাঁদপুর-ঢাকা রিভার ক্রুজ অনুষ্ঠিত
গুলিবিদ্ধ হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
শামীম নির্বাচিত হলে হাতিয়া মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে : আমীর খসরু
ওসমান হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা
হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত : ইসলামী আন্দোলন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিএমপি
আবদুল মোমেন খান দেশে সর্ব প্রথম দারিদ্র্য ও খাদ্য সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটান : মঈন খান
১০