
পঞ্চগড়, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, যারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের ভয় দেখানোর জন্য হাদীকে গুলি করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদী অভ্যুত্থানের পূর্ব থেকে অভ্যুত্থানের পর পর্যন্ত ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধের শিনা টান করে কথা বলে এসেছে। বিগত কয়েক মাসে এই বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বিভিন্ন পরিচয়ে সীমান্ত দিয়ে এমন অনেক মানুষকে অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। কারণ তারা জানে যারা জুলাইয়ে রক্ত দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছে আবার বাংলাদেশে সংকট আসলে তারা এক হয়ে যাবে।
আজ শুক্রবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদীকে গুলির প্রতিবাদে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী জমায়েতে এ কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের সামনে শুধু নির্বাচনী লড়াই নয়, আমাদের সামনে বাংলাদেশকে রক্ষা করার লড়াই। আমাদের সামনে শুধু ভোটের লড়াই নয়, যারা বাংলাদেশকে ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই। আওয়ামী সন্ত্রাসী যারা ছিলো তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। তাদের সাথে ইন্টারনাল আপোষ বা প্রটেকশন দিয়ে আগামীতে কোন কিছু সুষ্ঠুভাবে হতে পারে না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করছি সারা দেশে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে খুনি, সন্ত্রাসী, তাদের দোসর এবং বাইরে থেকে যারা ষড়যন্ত্রকারীদেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পরে বিগত এক বছরে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি স্টেপে যারা পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে পারতো তাদের অধিকাংশকে আমরা দেখলাম তারা তাদের জায়গা থেকে একেক জন মহানুভব ব্যক্তি হয়ে প্রত্যেক কালপ্রিটকে বিভিন্নভাবে সুযোগ করে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ কালপ্রিট যাদের করাগারে থাকার কথা ছিলো তাদেরকে বিভিন্নভাবে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাইরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।’
সারজিস বলেন, এই বুলেট শুধু শরিফ ওসমান হাদীর মাথায় নয়, এই বুলেট বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া যে অভ্যুত্থান- সেই অভ্যুত্থানের বুকে করা হয়েছে। এই বুলেট শুধু শরীফ ওসমান হাদীর মাথায় নয়। এই বুলেট বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া যে অভ্যুত্থান তার বুকে করা হয়েছে।
সারজিস আলম আরও বলেন, ওসমান হাদীকে গুলি করা একজন ব্যক্তিকে গুলি করার সমতুল্য নয়। বরং এটা দিয়ে যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, যারা আগামীর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে চাচ্ছে, যারা নির্বাচন কেন্দ্রীক প্রস্তুতিকে বানচাল করতে চাচ্ছে দেশে ও দেশের বাইরে ওই এজেন্টদের এটা একটা খেলা আর হাদীকে গুলি করার মধ্য দিয়ে এই খেলা তারা শুরু করলো। আগামীতে আমরা ঐক্যবদ্ধ না থাকলে আমরা যে পথে চলছি সেই পথ থেকে বিপথে যাওয়ার সম্ভবনা আছে।
এ সময় জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, খেলাপত মজলিসের জেলা সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিনসহ ছাত্রজনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।