কুয়াশার চাদরে মোড়া লালমনিরহাট, গাড়ি চলছে হেডলাইটের আলোতে

বাসস
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৬
ছবি : বাসস

বিপুল ইসলাম

লালমনিরহাট, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): শীত জেঁকে বসেছে লালমনিরহাটে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে শিশিরের দাপট। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পুরো জেলা ঘন কুয়াশার চাদরে ছিল ঢাকা। এ কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে আজ যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে কম গতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। সূর্যের তাপ কম থাকায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলছে। এতে কষ্ট বেড়েছে এ মানুষগুলোর। 

কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং স্বাভাবিক কাজকর্মও প্রভাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে নদীপাড় ও চরাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে শুধু মানুষ নয়, গৃহপালিত পশুপাখিও ভোগান্তিতে পড়েছে।

রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজকের দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা সদরের বড়বাড়ী বাজারের শিমুলতলা বাস স্ট্যান্ডে মহাসড়কের পরিবহন চালকরা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে রাস্তায় দৃশ্যমানতা কম। হেডলাইট জ্বালিয়ে, হর্ন বাজিয়ে, কম গতিতে আমরা ঢাকা যাচ্ছি। 

খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের দিনমজুর আলেম উদ্দিন (৫২) বলেন, ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে কাজের গতি কমে গেছে। সকাল ১১টার পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও সন্ধ্যার পর আবার কমে যায়।

আদিতমারীর দুর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষক এনামুল হোসেন (৫২) জানান, ঠান্ডার কারণে সকাল সকাল কাজে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সকাল ১০টা থেকে ১১টার আগে মাঠে নামা অনেকটা কষ্টসাধ্য।

কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ভ্যানচালক আলমগীর ইসলাম (৪০) বলেন, অতিরিক্ত ঠান্ডা থাকা সত্ত্বেও জীবিকার তাগিদে ভোর থেকেই ভ্যান চালাতে হচ্ছে। অনেকেই এত ঠান্ডায় ভ্যানে উঠতে চায় না।

জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শীতের তীব্রতার কারণে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নবজাতক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার রায়। তিনি বলেন, শীতকালে শিশুদের রোগসংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পায়। যারা খুবই গুরুতর অবস্থায় রয়েছে, শুধু তাদেরই ভর্তি করা হচ্ছে। বাকিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ডা. তপন আরও জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি অধিকাংশ শিশু সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়া অনেকের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও খিঁচুনি লক্ষ্য করা গেছে। তিনি অভিভাবকদের সতর্ক করে বলেন, এই শীতে যতটা সম্ভব শিশুদের গরম পানি খাওয়াতে হবে। অসুস্থ হলে তাজা ফলমূলের রস, শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো জরুরি।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানিয়েছেন, শীতের তীব্রতার কারণে ছিন্নমূল মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই জেলা জুড়ে এই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদ’ যোগে ঢাকা-চাঁদপুর-ঢাকা রিভার ক্রুজ অনুষ্ঠিত
গুলিবিদ্ধ হাদির পরিবারের পাশে ডা. জুবাইদা রহমান
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
শামীম নির্বাচিত হলে হাতিয়া মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে : আমীর খসরু
ওসমান হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা
হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত : ইসলামী আন্দোলন
ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিএমপি
আবদুল মোমেন খান দেশে সর্ব প্রথম দারিদ্র্য ও খাদ্য সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটান : মঈন খান
অতীতের যে কোনো সময় থেকে সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : তারেক রহমান
১০