
ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দারিদ্র্য সীমা উন্নয়নের পরে আবার তা যেন নীচে নেমে না আসে সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। যাতে এটি উঠা নামা না করে। সাস্টেইনেবিলিটি ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘পদ্ধতিগত যে দুর্বলতা আছে তা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের পদ্ধতিগত কিছু ভুল আছে। এছাড়া প্রোগ্রম বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা আছে। তা না হলে এতো ভালো ডিজাইন করার পরেও ২০২২ সালের পরে দারিদ্র্য সীমার হার নিম্নমুখী হতো না। এ বিষয়টিতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। এটিকে আরও উন্নত করতে হবে।’
তিনি আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ডিভিশনের (এফআইডি) আওতাধীন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) ‘গ্রামীণ জীবিকা রূপান্তর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থিতিস্থাপকতা উদ্যোগ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বুধবার সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এসডিএফ-এর চেয়ারম্যান ও সরকারের সাবেক সচিব ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং সচিব নাজমা মোবারেক, ইআরডি সচিব মো. শহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ব্যাংক সমর্থিত চলমান ‘রেজিলিয়েন্স, এন্টারপ্রেনিওরশিপ অ্যান্ড লাইভলিহুড ইমপ্রুভমেন্ট’ (রেলি) প্রকল্পের সিনিয়র এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট ও টাস্ক টিম লিডার সামিনা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসডিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসডিএফ-এর প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক হিসেবে স্মৃতিচারণ করে বিশ্বব্যাংকের দীর্ঘ সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তিনি গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, গ্রামীণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সহায়তায় এসডিএফ-এর ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।
বিশেষ অতিথি অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সরকারি প্রোজেক্টের মাধ্যমে দারিদ্র্য লেভেল কমানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। এজন্য গ্রামীণ কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মাইক্রোফাইন্যান্স কার্যক্রম এবং দরিদ্র বাছাই মানদণ্ড উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।এজন্য এবার আমরা উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে ভাতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।
বিশেষ অতিথি নাজমা মোবারেক সাম্প্রতিক দারিদ্র্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ এবং এসডিএফের অংশগ্রহণমূলক দরিদ্র শনাক্তকরণ (পিআইপি) পদ্ধতির প্রশংসা করেন।
ইআরডি সচিব শহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী রেলি প্রকল্পের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সঞ্চয় ও বীমা উদ্যোগ প্রসারে জোর দেন।
মূল প্রবন্ধে ড. রাজ্জাক বর্তমান দারিদ্র্য পরিস্থিতি, দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল, এসডিএফের সিডিডি পদ্ধতির কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে নগরাঞ্চলে এই মডেল সম্প্রসারণের সুপারিশ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ মূল প্রবন্ধের সুপারিশগুলো অনুসরণ করার আহ্বান জানান এবং সুবিধাভোগী সদস্যদের অনুপ্রেরণামূলক অভিজ্ঞতার জন্য ধন্যবাদ জানান।