বাসস
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:৪৯

ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেয়া বিএনপির মুখে গণতন্ত্র শোভা পায় না : চট্টগ্রামে শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ

চট্টগ্রাম, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, বিএনপি মুখে বললেও তারা গণতান্ত্রিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নয়। তাদের দলের জন্মই বন্দুকের নলের মাধ্যমে। অবৈধ ক্ষমতা দখল করার পর তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করেছিল। ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া একটি দল কিভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। 
আজ শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি জামাতের অরাজকতা ও নাশকতাবিরোধী কর্মকা-ের প্রতিবাদে এবং জনগণের জানমাল রক্ষার প্রত্যয়ে জেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
সভার সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন শত প্রতিকূলতার মধ্যেও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে ছিল। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস জনগণ তাই অরাজকতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায়। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য অতীতেও বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র সাময়িক সফল হলেও তার স্থায়িত্ব ছিল না। জনগণই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে রাজপথে প্রতিরোধ করেছে। কেননা ইতিহাসের শিক্ষা হলো কোন ষড়যন্ত্রকারী শেষ পর্যন্ত সফল হয় না বরং ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তাই এখন যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের পরিণতিও একই হবে। 
শান্তি সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে নগর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে ১৯৭১ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন শাহ আজিজুর রহমান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তাকেই প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন এবং ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিমের মত একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদ এবং সালাউদ্দীন কাদেরকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন। এখন প্রশ্ন জাগে বিএনপি কী আসলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে ? 
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এবং সমতা-সম্প্রীতি ও অর্থনৈতিক মুক্তি। তাহলে বিএনপি কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে ? তিনি স্পষ্টত উল্লেখ করেন, সংবিধান-সম্মতভাবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ। এছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। এই সত্যটি বিএনপি নেতারা বুঝেও অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিশৃংঙ্খলা ও অরাজকতার পথে এগুচ্ছে। তারা অতীতে আগুন সন্ত্রাস করে ধন-সম্পদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করেছে। এমনকি শত শত নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারপরও ক্ষমতায় যেতে পারেনি। জনগণ জানেন এবং বুঝেন দেশের উচ্চ আদালত জিয়াউর রহমানের ক্ষমতাগ্রহণ প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। সাংবিধানিকভাবে অবৈধ একজন রাষ্ট্রপ্রধানের গড়া দল বিএনপিও অবৈধ। তাই তাদের মুখে গণতন্ত্রের মায়া কান্না শোভা পায় না এবং নিজেকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করার অপচেষ্টা করছে মাত্র। 
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকবো। জনগণের জানমাল রক্ষায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশে থাকবো। 
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা আলহাজ সফর আলী, সম্পাদকম-লীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী,  মশিউর রহমান চৌধুরী, দিদারুল আলম চৌধুরী, জহর লাল হাজারী প্রমুখ।