বাসস
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:০৭

জাতিসংঘের স্বীকৃতি বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ন্যায্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে : জাসদ

ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : জাতিসংঘ কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান দ্বি-জাতি তত্ত্ব অর্থাৎ ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অন্যায্যতা এবং বাংলা ভাষাভিত্তিক বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ন্যায্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। একইসাথে পৃথিবীর ভাষাভিত্তিক সকল জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে একথা বলেন। 
আগামীকাল মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস । নেতৃদ্বয় বলেন, দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে অবৈজ্ঞানিকভাবে চাপিয়ে দেয়া পাকি¯াÍন রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে শুরু থেকেই পূর্ব বাংলার জনগণের ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অধিকার অস্বীকৃত ছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার বাঙালিদের আত্মপরিচয় মুছে দিয়ে চিরদিনের জন্য দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ করে রাখতে বাঙালি জাতিকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করে রাখাতে বাঙালির মায়ের ভাষা বাংলা ভাষাকে কেড়ে নিয়ে বাঙালি জাতিকে হীনবল ও দূর্বল জনগোষ্ঠীতে পরিনত করতে চেয়েছিল। তারা বলেন,পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর এই জাতিগত নিপীড়ণের বিরুদ্ধে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ভাষাভিত্তিক আধুনিক ও রাজনৈতিক বাঙালি জাতীয়বাদের শক্ত ভিত্তি গড়ে উঠেছিল। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি দ্বি-জাতি তত্ত্বের তমসাচ্ছন্নতা ছিন্ন করে আলোর পথ দেখেছিল এবং বাঙালি জাতীয়াবাদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক জাতি হিসাবে গড়ে উঠেছিল।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে ভাষাভিত্তিক আধুনিক রাজনৈতিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের গড়ে উঠেছিল, সেই বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনাকে ধারণ করেই ধাপে ধাপে স্বাধীকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারায় ১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র থেকে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিতাড়িত করেছিলো। নেতৃদ্বয়  শহীদ সালাম, শহীদ বরকত, শহীদ রফিক, শহীদ জব্বার, শহীদ শফিকসহ মহান ভাষা শহীদগণ, ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবিতে ঐতিহাসিক ছাত্রআন্দোলনের নেতা-কর্মী মহান ভাষা সৈনিকগণ এবং ২১শে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা উদ্যোগী হয়েছিলেন, ভুমিকা রেখেছিলেন তাদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং মহান একুশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে বাঙালিসহ বাংলাদেশের সকল জাতিস্বত্তার জন্য অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মিাণের সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।