শিরোনাম
ঢাকা (উত্তর), ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : উত্তরা পূর্ব থানা হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া গণহত্যায় জড়িত মামলার আসামি পুলিশের সাবেক ওসি শাহ আলমের পুন:গ্রেফতারে আল্টিমেটাম দিয়েছে উত্তরার ছাত্র-জনতা।
আজ জুমার নামাজের পরে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে থেকে ছাত্র-জনতা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
আরো বক্তব্য দেন উত্তরায় গণহত্যা নিয়ে কাজ করা অন্যতম সংগঠন জুলাই রিভোলিউশনারি অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র সালেহ মাহমুদ রায়হান, প্রকৌশলী তালহা জুবায়েরসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এটা কি বাংলা সিনেমা? এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গণহত্যার একজন অন্যতম নায়ক এইভাবে থানা হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া, এটা জনতা সহ্য করবে না। আমাদের কাছে তথ্য আছে, তাকে লকাপে না রেখে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহিবুল্লাহ সাহেবের রুমে রাখা হয়েছিল। সে ওইখান থেকে সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়। এটাতো পালিয়ে যাওয়া নয়, তাকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুনঃগ্রেফতার করতে হবে।’
বিক্ষোভ শেষে আজমপুর বাস স্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত সমােেবশ উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রওনক জাহান এসে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলেন। তিনি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। যারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবে এবং আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি, তাকে পুনঃগ্রেফতার করার জন্য। আপনারা জানেন, ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে গ্রেফতারের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে এএসআই সাজ্জাদ হোসেনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ও বর্তমান ওসি মহিবুল্লাহকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ওসি শাহ আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, উত্তরা গণহত্যার মূল স্পট ছিল উত্তরা পূর্ব থানার সামনের এলাকা এবং ৫ আগস্ট বিকালে থানার ভিতর এবং ছাদ থেকে ছোড়া অতর্কিত গুলিতে এই একটি স্পটে শহিদ হন প্রায় ৫০ জন। যে কারণে ওইদিন রাতে বিক্ষুদ্ধ জনতা উত্তরা পূর্ব থানা ভবন পুড়িয়ে দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শাহ আলম সর্বশেষ ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে পরিদর্শক কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। ডিএমপির একটি দল বুধবার (৮ জানুয়ারি) মধ্যরাতে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া থেকে বুধবার মধ্যরাতে তাঁকে উত্তরা পূর্ব থানায় এনে হেফাজতে রাখা হয়। দুপুরে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে উত্তরা পূর্ব থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে থানা পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যান।