বাসস
  ১৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৩২
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৩:৫৫

বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালে ডিপ্লোমা কোর্সের অনুমোদন

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৪ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স চালুর অনুমোদন দিয়েছে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বছরই ৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে এ কোর্সের ক্লাস শুরু হবে বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালে। ইতেমধ্যে ওই ৪ শিক্ষার্থীর নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।
গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি  বঙ্গমাতা চক্ষু হাসাপাতালে পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স চালুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতালটি পরিদর্শন করে। এ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। গত ৯ মার্চ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স চালুর অনুমোদন দেয়। ১০ মার্চ  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. একেএম মোশাররফ হোসাইন  স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৪ জন শিক্ষার্থীর নামের তালিকা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন, মোঃ ফায়জুল রাজ্জাক খান, কাজী সানজিদা জামান, শুক্লা দে ও এবিএম মাহফুজুর রহমান। পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির জন্য এমবিবিএস পাস চিকিৎসকরা আবেদন করেন। পরে তারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ওই ৪ জনের নামের তালিকা আমাদের প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। আগামী জুলাই মাসে ওই ৪ জনকে ভর্তি করে পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স শুরু করা হবে। ্এ কোর্সের মেয়াদ ২ বছর।
বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী  আরো বলেন, প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, আমাদের হাসপাতালের ভিজিটিং প্রফেসর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসররা এ কোর্সের ক্লাস নেবেন। পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্সটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত। এ কোর্স চালুর মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মায়ের নামের এ হাসপাতালটি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, এ হাসপাতালে লো-ভিশন, অকলু প্লাস্টিক সার্জারী, রেটিনা, শিশু চক্ষু বিভাসহ বিভিন্ন বিভাগ চালু করা হয়েছে। জাতির সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ চক্ষু সেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আরো নতুন নতুন বিভাগ খোলা হচ্ছে।  সেই সাথে এখানে আধুনিক মানের বঙ্গমাতা লাইব্রেরি, বঙ্গমাতা ফটো গ্যালারী স্থাপন করা হয়েছে। মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে প্রতিষ্ঠিত এ হাসপাতালটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবায় অবদান রেখে চলেছে। দেশের মানুষের ছানি জনিত অন্ধত্ব বিমোচনে এ হাসপাতাল কাজ করছে। ইতিমধ্যে হাসপাতালটির সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এ হাসপাতালটিকে একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতালে পরিণত করব। সেই লক্ষ্যে পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হয়েছে। অফথালমিক এ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স চলমান রয়েছে। আরো কিছু কোর্স এখানে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা এখানে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট শুরু করব।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউপি চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান চৌধূরী টুটুল বলেন, বঙ্গমাতা চক্ষু  হাসপাতাল শুধু একটি হাসপাতাল নয়। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে আধুনিক চক্ষু চিকিৎসায় একটি আস্থার নাম। ২০১৬ সালে এ হাসপাতাল উদ্বোধনের পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষ বিনামূল্যে চক্ষুরোগের আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। সেই সাথে স্বযতেœ্র চোখের বিভিন্ন অপারেশন ফ্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এখানে পোস্ট গ্রাজুয়েট অফথালমজি ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হচ্ছে। এটি এ হাসপাতালের বিজয় মুকুটে আরো একটি পালক সংযোজন করবে।
বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার শিবপুর গ্রামের চক্ষু রোগী অচিন্ত্য বিশ্বাস (৫২) বলেন, এখানে চিকিৎসক সংকট প্রকট। তারপরও তারা হাসিমুখে ভালো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ হাসপাতালটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন। এখানে রোগীবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। প্রয়োজনীয়  চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলে আমরা আরো ভালো সেবা পাব। তাই আমি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই। বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপতালের সাথে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চালু হলে এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে। আমি মনেকরি সরকার প্রধান শেখ হাসিনার মায়ের নামের এ হাসপাতালে  ট্রেনিং ইনস্টিটিউট  দ্রুত চালু করা প্রয়োজন।