বাসস
  ২০ মার্চ ২০২৩, ১২:৪১

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ১৭,৬৭৬ হেক্টর বেশি জমিতে ভূট্টার আবাদ

॥ সুলতান মাহমুদ ॥
যশোর, ২০ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : চলতি মওসুমে যশোর কৃষি জোনের আওতায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার ৬৭৬ হেক্টর বেশি জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে।
এ কৃষি জোনের আওতায় যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় মোট ৮০ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৩৯ হেক্টর জমিতে। আবাদ হওয়া জমিতে প্রায় ১১ লাখ টন ভূট্টা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বাসসকে জানান, চলতি মওসুমে (২০২২-২৩) এ কৃষি জোনের আওতায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবচেয়ে বেশি জমিতে ভূট্টার চাষ হয়েছে।এ জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে। মেহেরপুর জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। ঝিনাইদহ জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ১১২ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে। কুষ্টিয়া জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৯১৬ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। মাগুরা জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৫২ হেক্টর জমিতে এবং যশোর জেলায় ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৩৭ হেক্টর জমিতে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হোসেন জানান, বিগত কয়েক বছর যাবত ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। গমে অনেক সময় পোকার আক্রমণ হয়। এতে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। কিন্তু ভুট্টায় পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। তাছাড়া ভুট্টা চাষে তেমন কোন সেচের প্রয়োজন হয় না।এ কারণে অনেক চাষী গমের পরিবর্তে ভুট্টা চাষে মনোযোগী হচ্ছেন। এক সময়ের অনাবাদি ও পতিত জমিতে ভুট্টার চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা। অনেক প্রান্তিক ও বর্গাচাষি অর্থকরী এ ফসল চাষে দিন-দিন ঝুঁকে পড়ছেন। লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে দিন-দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভুট্টা চাষ।
এছাড়া কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ভুট্টা চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ,পরামর্শ, মাঠ দিবস, উঠান বৈঠক, নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভূট্টা চাষে অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম। ভূট্টার ফলনও বেশি। ভুট্টা মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি গো-খাদ্য, পোল্ট্রি ফিড ও মাছের খাবার হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাজারে ভুট্টার চাহিদা ব্যাপক থাকায় ভুট্টার চাষ দিন-দিন বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মওসুমে এ অঞ্চলে ভূট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।