বাসস
  ২০ মার্চ ২০২৩, ১৩:০৫
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩, ১৩:১৬

ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ

॥ মো. শফিকুল ইসলাম ॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত আরো ২০টি ঘর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। ‘আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার’ স্লোগানে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪র্থ পর্যায়ে নির্মাণ করা হয়েছে এসব সেমিপাকা ঘর।
এর আগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আরও ১১৬টি পরিবারসহ উপজেলার মোট ১৩৬টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর পেয়েছে। ফলে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলার তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা।
আগামী বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে আশুগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেই দুই শতাংশ জমির দলীলসহ এই ঘরগুলো উপকারভোগীদের মাঝে আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তাহন্তর করবে উপজেলা প্রশাসন।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক জানান, ইতোমধ্যেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খনুভাবে যাচাই-বাচাই করে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করে তাদের নামে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি সেমিপাকা ঘর ও দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়েছে।
জমিসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত সরকারি বাসগৃহ পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে। বন্দোবস্তকৃত খাঁস জমির কবুলিয়তসহ সরকারি খরচে নির্মিত সেমিপাকা বাসগৃহ পেয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছে সুবিধাভোগী ১৩৬ পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাক আরও বলেন, উপজেলা আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৩৮টি, আড়াইসিধা ইউনিয়নে ৫৬টি, শরীফপুর ইউনিয়নে ৩৩টি, তালশহর ইউনিয়নে ৫টি ও তারুয়া ইউনিয়নে ৮টিসহ মোট ১৩৬টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর পেয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করে জায়গা বরাদ্দ থেকে শুরু করে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছে উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে ভূমিহীন পরিবার ঘরে উঠে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে খেলার মাঠ, পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ, পানি সরবরাহ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নকশা অনুযায়ী দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৯ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুটসহ সাড়ে ৮ ফুট উচ্চতা সম্বলিত একটি ঘরে বারান্দা, ৮ ফুট করে দু’টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর, একটি গোসল খানা, একটি টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। ঘরগুলো নির্মিত হয়েছে দেড় ফুট মাটির নিচে ১০ ইঞ্চি ইটের ওপর ৫ইঞ্চি দেয়ালের গাঁথুনি দিয়ে।
ঘর পাওয়া ভূমিহীনরা জানান ঘরের সঙ্গে জমির কাগজপত্রের মালিকানা পেয়ে আমরা এখন ভীষণ খুশি। বিনামূল্যে এসব ঘর পেয়ে আনন্দে আপ্লুত সুবিধাভোগীরা। তাদের অনেকেরই কাছে এরকম একটি ঘরের মালিক হওয়া ছিল স্বপ্নের মতো। অবশেষে তাদের এই স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা হওয়ায় খুশি ভূমিহীন ও গৃহহীনরা। প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রাণ খুলে দোয়াও করছেন অনেকে। ঘর পেয়ে এসব পরিবার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন সুবিধাভোগীরা। নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন। তাদের চোখে মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া উপজেলার শরীফপুর গ্রামের নুরু মিয়া, নারগিছ, আলী আজগর, জেসমিন আক্তার ও জুবেদা বেগমসহ অনেকেই প্রায় অভিন্ন ভাষায় বলেন, আমরা খুব খুশি যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, জমিসহ পাকা নতুন ঘর পাব। আমরা শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি।
পরের ঘরে থাকার বেদনা ভুলে নিজের জায়গায় থাকতে পেরে আনন্দে আত্মহারা পরিবার গুলো প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন তারা।