শিশুর জন্মের পর কমপক্ষে ৬ মাস বুকের দুধ পান করানো জরুরি

বাসস
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৫৭
ছবি : ইউনিসেফের ফেসবুক

ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : শ্রেয়া সদ্য মা হয়েছেন। পঁচিশ বছর বয়সে বিয়ে আর সাতাশ বছর বয়সে প্রথম মা হওয়া। প্রথম দু’মাস সন্তানকে বুকের দুধ পান করান। তারপর হঠাৎ করে স্বামীকে বলেন, এখন থেকে সন্তানকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাজারের গুড়ো দুধও খাওয়াবেন। স্বামী অনেক বোঝালেও তার এক কথা। শেষ পর্যন্ত শ্রেয়া তার সন্তানকে বুকের দুধের পাশাপাশি গুড়ো দুধও পান করাতে লাগলেন।

ছাব্বিশ বছর বয়সী সীমাও মা হয়েছেন প্রথমবার। চার মাস বুকের দুধ পান করানোর পর হঠাৎ করেই তার বাম স্তনে ব্যাথা শুরু হয়। স্তনও কিছুটা ফুলে গেছে। ব্যাথার কারণে জ্বরও এসেছে তার। সন্তানকে দুধ পান করাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। 

রাহেলা চাকরিজীবী। দ্বিতীয়বারের মত মা হয়েছেন সাত মাস আগে। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কাজে যোগ দিয়েছেন। যখন বাড়িতে ছিলেন তখন নিয়মিত সন্তানকে দুধ পান করাতেন। তিনিও হঠাৎ স্তনে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেন। শরীরে জ্বরও ছিল। পায়ে

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান বলেন, শিশুর জন্মের পর কমপক্ষে ছয় মাস বুকের দুধ পান করাতেই হবে। এ সময় অন্য কোনো খাবার শিশুকে দেওয়া যাবে না। 

তিনি বলেন, মায়েরা অনেক সময় এ ধরনের সমস্যায় ভুগেন। মূলত চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ সমস্যাকে বলে ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট। স্তনগ্রন্থিতে দুগ্ধনালির ভেতরে দুধ জমে গিয়ে এবং স্তনে রক্ত ও লাসিকা প্রবাহ বেড়ে গিয়ে এ সমস্যা তৈরি হয়। এ সমস্যা হওয়ার প্রধান কারণ বাচ্চা যে পরিমাণ দুধ পান করে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ দুধ উৎপাদন হওয়া, বাচ্চাকে সঠিক উপায়ে দুধ পান না করানো এবং বাচ্চাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দুধ পান করানো থেকে বিরত থাকা। 

ব্রেস্ট এনগর্জমেন্ট হলে সাধারনত স্তন প্রচন্ড ব্যাথা হয়, স্তন ভারী হয়, ফুলে যায় এবং স্তন শক্ত হয়ে যায়। এ ছাড়াও শরীরে জ্বর আসতে পারে বা জ্বর জ্বর ভাব হতে পারে। এ সময় স্তনে প্রচন্ড ব্যাথা হয় যার কারণে মায়েরা তাদের সন্তানদের দুধ পান করাতে গিয়ে কষ্ট পান। এ জন্য প্রথমে স্তনের ব্যাথা কমাতে হবে এবং জমে থাকা অতিরিক্ত দুধ বের করে ফেলতে হবে। 

তিনি বলেন, এ সময় ভুক্তভোগী মা ব্যথার ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল খেতে পারেন। এছাড়া স্তনে হালকা গরম সেঁক দেওয়া যায়। কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে হালকা সেঁক দেয়া যেতে পারে যাতে করে কোন ক্ষতি না হয়। এতে করে স্তনে জমে থাকা অতিরিক্ত দুধ সহজে বেরিয়ে যায়। এ ছাড়া মায়েরা জমে থাকা দুধ টিপে অথবা ব্রেস্ট পাম্প দিয়ে দুধ বের করে আনতে পারেন। 

তিনি বলেন, এসব দুধ একটি পরিষ্কার পাত্রে অথবা বোতলে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এসব দুধ চার ঘন্টার মধ্যে শিশুকে পান করাতে হবে। 

এ ছাড়াও শিশুকে বারবার দুধ খাওয়াতে হবে। এক স্তনের দুধ সম্পূর্ণ পান করিয়ে অন্য স্তনের দুধও সম্পূর্ণ পান করাতে হবে। এতে করে দুধ জমে থাকবে না। 

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন বলেন, ব্রেস্ট এনগর্জমেন্টের সঠিক ব্যবস্থা না নিলে স্তনে প্রদাহ হতে পারে। যদি বেশি জ্বর আসে অথবা প্রচন্ড ব্যাথা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে পরামর্শের জন্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কসমোপ্রফ-ভারত ২০২৫ : আন্তর্জাতিক কসমেটিকস প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের উপস্থিতি
ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম প্রতিরোধে সিআইডি-বাংলাদেশ ব্যাংক-এমএফএসের মতবিনিময় সভা
৪৫তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
আসন্ন নির্বাচনে ভুয়া তথ্য মোকাবেলায় সিআইডি-টিকটকের কাঠামোবদ্ধ সমন্বয়ের উদ্যোগ
মুগদায় পিস্তল-গুলি, ম্যাগজিন ও প্রাইভেটকারসহ ৫ জন গ্রেফতার
ইসিতে আইনশৃঙ্খলা বিষয় মতবিনিময় সভা বৃহস্পতিবার
ডিআরইউ লেখক সম্মাননা পেলেন ২৯ সাংবাদিক
ডিসেম্বরে ওয়ান স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস ও আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ চালু করবে ডিএসই 
হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগে দরখাস্ত আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি
একটি দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
১০