আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর দুর্নীতির শিকার ৭৪ শতাংশ বাংলাদেশি: জাতিসংঘ

বাসস
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৯
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনামলে প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন (৭৪.৪ শতাংশ) বাংলাদেশি আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতি প্রশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামোর নিম্নস্তরে ব্যাপক দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির প্রতিফলন ঘটিয়েছে।’

ওএইচসিএইচআরের জেনেভা অফিস থেকে গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলন সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। 

এতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, বিচার বিভাগ, নিরাপত্তা খাত এবং প্রশাসনের ওপর খবরদারি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই ধরনের কর্তৃত্ব অর্থনীতিতে ছায়াপাত করেছে, যার ফলে শোষণমূলক পৃষ্ঠপোষকতা, স্বজন তোষণ পুঁজিবাদ ও দুর্নীতি বিস্তার লাভ করেছে।’

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে বৃহৎ ব্যবসায়, রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প এবং বড় অবকাঠামো প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার কৌশলে অর্থনৈতিক তথ্য বিকৃত করেছে। ২০১৩ সালের তুলনায় মাথাপিছু জিডিপি দ্বিগুণ করার তথ্য দেখানো হলেও বাস্তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বণ্টন ছিল অসম।

২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আয় ও ভোগের বৈষম্যের পাশাপাশি দেশের শীর্ষ পাঁচ শতাংশ ধনী শ্রেণির মানুষের একচেটিয়া আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় পরোক্ষ করের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল যা মধ্য ও নিম্নআয়ের জনগণের ওপর অতিরিক্ত বোঝা সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও সম্পদের কেন্দ্রীকরণ এবং এর ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির মূল কারণ ছিল সরকারি ক্রয় খাতে ব্যাপক দুর্নীতি এবং আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ধনী ব্যক্তিদের দ্বারা ব্যাংক, জ্বালানি খাত ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতের নিয়ন্ত্রণ।’

তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিশাল অংকের ঋণের মাধ্যমে বিভিন্ন বড় ব্যাংক থেকে অর্থ লুট করেছেন, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘অবৈধভাবে অর্জিত এসব অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ধনী ব্যক্তিদের স্বার্থে বিদেশে বিনিয়োগ করা হয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
মীরসরাইয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন বিএনপির নেতারা
লেবাননের ভেতরে দেয়াল নির্মাণ করেছে ইসরাইল : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী
কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনের প্রবেশপথ অবরোধ করল আদিবাসী বিক্ষোভকারীরা
আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এনসিপি নেতৃবৃন্দের বৈঠক
শেখ হাসিনা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন : ডা. জাহিদ
সিলেটে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ জন রাজধানীতে গ্রেফতার 
রাঙ্গামাটিতে দুই দিনব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রাম লেখক সম্মেলন
লুক্সেমবার্গের গ্র্যান্ড ডিউকের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
১০