গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা কার্যক্রম জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বাসস
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ২৩:০১
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে এক সভায় বক্তব্য রাখেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার কার্যক্রমও আরও জোরদার এবং প্রাণিসম্পদ সেবা আধুনিকায়নের আহ্বান জানিয়েছে বলেছেন, দেশ একটি বিশাল সম্ভাবনাময় সুযোগ হারাচ্ছে।

আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী মন্ত্রণালয়। আমাদের সমুদ্র ও খামার উভয়কে দেখভালের দায়িত্ব এটির। কিন্তু এখনও আমরা সাগরের পুরো জগতে প্রবেশ করিনি”।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের জানতে হবে আমাদের কী ধরনের মৎস্য সম্পদ আছে, কী হারাচ্ছি এবং কেন আমরা পিছিয়ে আছি। যদি আমরা সঠিকভাবে কাজ করি, তাহলে এই খাত আমাদের অর্থনীতির জন্য এক নতুন জগৎ উন্মোচন করতে পারে।”

তিনি বঙ্গোপসাগরে যথাযথ জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সম্ভাবনাময় এলাকা চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশ জাপান বা থাইল্যান্ডের মতো দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে সাহায্য নিতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাপান ইতোমধ্যেই সাহায্যের আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা দেখব যৌথ উদ্যোগ সম্ভব কিনা। কিন্তু প্রথমে আমাদের নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন,এটি শুধু আরও মাছ ধরার ব্যাপার নয়, এটি একটি শিল্প গড়ে তোলার বিষয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে গবেষণায় ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে বৈশ্বিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও আইডিয়া আনতে হবে।

তিনি বলেন,“শুধু গবেষণার জন্য গবেষণা নয়, এই গবেষণা এমন হতে হবে, তা যেন নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমেও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার অধ্যয়ন যুক্ত করার কথা ভাবতে হবে। এভাবেই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।”

প্রাণিসম্পদ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, খাদ্য ঘাটতি, রোগবালাই ও উচ্চমূল্যের টিকা গবাদিপশু খামারিদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। “আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে পশুখাদ্য ও টিকা উৎপাদনের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। খরচ কমাতে ও আত্মনির্ভর হতে এটাই একমাত্র পথ।”

তিনি উল্লেখ করেন, হালাল মাংসের বাজারে বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে বাড়ছে। “হালাল মাংসের বৈশ্বিক নেতা মালয়েশিয়া এখানে বিনিয়োগ করতে চায়। আমাদের অবশ্যই কতটুকু সম্ভাবনা আছে , তা যাচাই করা উচিত,”।

গবাদিপশুর চামড়ার সিন্ডিকেট ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী ঈদুল আজহার আগে থেকেই পূর্ব পরিকল্পনা নেয়া জরুরি। “একই সমস্যা পুনরায় ঘটতে দেয়া যাবে না। গরুর চামড়ার জন্য একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ বাজার নিশ্চিত করতে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।”

জাতীয় চিড়িয়াখানার অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “এটি হৃদয়বিদারক। শুনেছি বহু বছর ধরে পশুপাখি ও প্রাণীদের ঠিকমতো দেখভাল করা হচ্ছে না, এমনকি তাদের খাবারও চুরি হয়। এটা অমানবিক। চিড়িয়াখানার পুরো সংস্কার দরকার।”

তিনি দেশের ভেটেরিনারি ক্লিনিকগুলো আধুনিকায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অনেক ক্লিনিকই পুরোনো হয়ে গেছে, কিছুতো কার্যকর নয়। কৃষক ও পশুর খামারিদের জন্য এগুলোকে প্রকৃত সহায়তা কেন্দ্রে রূপান্তর করতে হবে । ”

বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
রেকর্ড জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল ভারত
জামায়াত নেতাদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের বৈঠক
চট্টগ্রামে হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার
চট্টগ্রামে হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার
১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসছেন টাফেল
নারায়ণগঞ্জে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি জব্দ
তিন জেলায় দুদকের অভিযান: সেতু, স্কুল ভবন ও স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম উদ্‌ঘাটন
বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে হারল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল
৫৭ রানে অলআউট আরব আমিরাত
জার্মানির বার্লিনে এখনো বিদ্যুৎবিহীন ২০ হাজার ঘর-বাড়ি
১০