সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে ইসি: সিইসি নাসির উদ্দিন

বাসস
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১৬ আপডেট: : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২৩
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না নির্বাচন কমিশন।

তিনি বলেন, 'আমরা এবার পুরো সংসদীয় আসনের নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করেছি। যদি দেখা যায় যে, কোথাও গুরুতর সমস্যা বা অনিয়ম হয়েছে, তাহলে প্রয়োজনে পুরো আসনের ভোট বাতিল করে দেব। এরপর সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পুনরায় ভোটগ্রহণ করব।'

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত নির্বাচনি সংলাপের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'আমরা চাই এই নির্বাচন যেন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। এ জন্য আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষক আনার প্রস্তাবকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সংখ্যাও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।'

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এখনকার নির্বাচন কেবল মাঠের লড়াই নয়, ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও অনেক সমস্যা দেখা দেয়। অপপ্রচার, ভুয়া তথ্য ও প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে যেসব প্রস্তাব এসেছে তা আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি। অতীতে অনেক পরামর্শ বাস্তবায়িত হয়নি—কিন্তু এবার আমরা চেষ্টা করব সেগুলো বাস্তবায়ন করার।'

সিইসি বলেন, 'আমাদের সদিচ্ছার অভাব নেই। আমরা চাই অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। তবে এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা। নির্বাচন কমিশন একা এটা করতে পারবে না। সরকার, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ—সবার সমন্বিত সহযোগিতা দরকার। আমরা তো মঙ্গল গ্রহ থেকে আসিনি। এ দেশে থেকে, এ দেশের মানুষের সহযোগিতা নিয়েই আমাদের নির্বাচন করতে হবে।'

তিনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনারা সমাজে প্রভাবশালী। মানুষ আপনাদের কথা শোনে। তাই জনগণকে ভোটের প্রতি আগ্রহী করে তুলুন। সবাই যেন কেন্দ্রে আসে এবং নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে, সে জন্য মানুষকে উৎসাহিত করুন।'

সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, সিনিয়র সচিবসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বেগম রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ভোটের আগে, ভোট গ্রহন চলার সময় ও পরে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, 'আস্থার সংকট এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ ঠিকই বুঝে পরিস্থিতি কী। সাধারণ মানুষকে অবহেলা করলে চলবে না।' তিনি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী ও নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, নির্বাচনকালে যদি সরকার কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করে, তা প্রকাশ্যে আনতে হবে।

তিনি বলেন, 'ইসিকে গণমাধ্যমের স্বাধীন চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমকে অবাধ বিচরণের অনুমতি দেওয়া হলে জনগণও নির্বাচনের প্রতি আস্থা পাবে।'

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা তৈরি করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, 'শুধু ভোটের দিন নয়, ভোটের আগে থেকেই কমিশনের কার্যক্রমে নিরপেক্ষতার প্রতিফলন থাকতে হবে। তাহলেই জনগণ নিশ্চিত হবে যে, তাদের ভোট সঠিকভাবে গণনা হবে।'

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, নারী অধিকারকর্মী, উন্নয়নকর্মীসহ ১৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা প্রত্যেকে আসন্ন নির্বাচনের আগে আস্থা পুনরুদ্ধার, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখা, প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন প্রস্তাব দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিডা ও জাইকা বিনিয়োগকারীদের জন্য চালু করল একক ডিজিটাল গেটওয়ে ‘বাংলাবিজ’
ক্রীড়াবিদদের ক্যারিয়ার নিয়ে অলিম্পিকের কর্মশালা অনুষ্ঠিত
২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহে ১১.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
নারী নির্যাতনকারী ও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সুপ্রদীপ চাকমা
জামায়াত আমিরের সঙ্গে স্পেনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
চট্টগ্রামে হারানো স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা উদ্ধার
নড়াইলে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে নেপালের ইতিহাস
১০