
ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ৩৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজস্ব ভবনে ‘পিকেএসএফ দিবস ২০২৫’ উদ্যাপন করা হয়েছে।
এতে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
জাকির আহমেদ খান বলেন, সাড়ে তিন দশকের পথচলায় পিকেএসএফ কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ করেছে।
পিকেএসএফ-কে বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বাতিঘর হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে সম্প্রতি পিকেএসএফের কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২৫-২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো-শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ঝুঁকি হ্রাস, ও সক্ষমতা বৃদ্ধি।
এ কৌশলগত পরিকল্পনা মাঠ পর্যায়ে সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য পিকেএসএফের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি নতুন করে শপথ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাকির আহমেদ খান বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী, সহযোগী সংস্থা, মাঠ পর্যায়ের সদস্যসহ পিকেএসএফের সকল অংশীজনকে ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া, তিনি পিকেএসএফ এবং এর সহযোগী সংস্থাসমূহকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
স্বাগত বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, সম্পূর্ণ দেশজ ধারণার ওপর ভিত্তি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পরামর্শ বিবেচনা করে সরকার ১৯৯০ সালে পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠা করে। গত ৩৫ বছরে পিকেএসএফ পুঁজি, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও বাজারজাতকরণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনে নানাবিধ কার্যক্রম সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের মতে, আমরা ক্ষুদ্র উদ্যোগে অর্থায়নকারী বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড এবং অ্যাডাপটেশন ফান্ড আমাদেরকে জাতীয় বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা আমাদের কার্যকারিতা, স্বচ্ছতা ও সুশাসন চর্চারই স্বীকৃতি। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের নিকট আমাদের ভাবমূর্তি অত্যন্ত উজ্জ্বল।’
তিনি বলেন, পিকেএসএফ চেয়ারম্যানের দূরদৃষ্টি ও প্রজ্ঞাপূর্ণ দিকনির্দেশনায় সম্প্রতি পিকেএসএফের কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। এ বছরের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান অনাড়ম্বরভাবে পালন করা হলেও এর তাৎপর্য অনেক বেশি। আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের শুরুর বছর এটি। এ পরিকল্পনার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন শেষে ২০৩০ সালে আড়ম্বরপূর্ণ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবো বলে আমরা আশাবাদী ।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কিউ এম গোলাম মাওলা, মো. মশিয়ার রহমান, মুহম্মদ হাসান খালেদ ও ড. আকন্দ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া, ‘আমাদের অঙ্গীকার’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় পিকেএসএফের সকল স্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন এবং তারা প্রতিষ্ঠানকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ নেন।
এর আগে, পায়রা উড়িয়ে ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
পিকেএসএফ বর্তমানে সারাদেশে দুই শতাধিক সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে ২ কোটিরও বেশি নিম্ন আয়ের পরিবারকে বহুমুখী আর্থিক ও অ-আর্থিক সেবা প্রদান করছে।
২০৩০ সালের মধ্যে প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগী পরিবারের সংখ্যা আড়াই কোটিতে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে পিকেএসএফ।